১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে ভিডিও গেমাররা

প্রতিদিনের ডেস্ক
মাত্রাতিরিক্ত বা সহ্য ক্ষমতার বাইরে থাকা সবকিছুই ক্ষতিকর। এর মধ্যে শব্দ অন্যতম। অনেকে বেশি শব্দে গান শোনা বা গেম খেলতে পছন্দ করে। এতে নিজের পাশাপাশি অন্যদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। যেসব গেমার নিয়মিত বেশি শব্দে ভিডিও গেম খেলে তাদের স্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তি হারানোর শঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি এক গবেষণা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।বিবিসিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, গেমাররা দীর্ঘ সময় অতিরিক্ত ভলিউমে গেম খেলার মাধ্যমে নিজেদের শ্রবণশক্তিকে গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে, যা তাদের শ্রবণশক্তির অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করে টিনিটাসে পর্যন্ত আক্রান্ত করতে পারে। মূলত চারদিক নিস্তব্ধ থাকার পরও কানে অস্বাভাবিক শব্দ শোনার এ সমস্যাকে টিনিটাস রোগ বলা হয়।
বিএমজে পাবলিক হেলথে প্রকাশিত এ গবেষণাপত্রে ১৪টি গবেষণা পর্যালোচনা করা হয়েছে। যেখানে মোট ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। এতে দেখা যায়, বেশির ভাগ গেমাররা গেমিংয়ের সময় ভলিউম অনিরাপদ স্তরে রেখে গেমিং করে থাকে। যদি গেমাররা নিরাপদ ভলিউম স্তরে সাইন্ড কমিয়ে এনে গেমিং করে তাহলে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে।
গবেষণায় বলা হয়, দীর্ঘ সময় অতিরিক্ত ভলিউমে গেমিং করা ব্যক্তির শ্রবণশক্তি হারানোর অন্যতম কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে। এজন্য গবেষকরা গেমারদের এ বিষয়ে আরো জনসচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) পরামর্শ অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক কেউ সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা ৮০ ডেসিবেল (ডিবি) শব্দ মাত্রা নিরাপদে সহ্য করতে পারবে। তবে এ স্তরের বাইরে দীর্ঘ সময় উচ্চ বা অতিরিক্ত ভলিউমে গেমিং করা হলে তা শ্রবণশক্তির ক্ষতি করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্কদের সপ্তাহে ৪ ঘণ্টা ৮৫ ডেসিবেল এবং সর্বোচ্চ সপ্তাহে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ৯০ ডেসিবেল মাত্রার মধ্যে গান শুনতে পারেন। তবে শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে এ শব্দের সীমা আরো কম।
গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু শুটিংনির্ভর অ্যাকশন গেমে গড় শব্দের মাত্রা ৮৮ দশমিক ৫ থেকে ৯১ দশমিক ২ ডেসিবলের মতো থাকে। কিছু ক্ষেত্রে তা ১১৯ ডেসিবল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তিনটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে, মেয়েদের তুলনায় ছেলেরাই বেশি সময় অতিরিক্ত ভলিউমে ভিডিও গেম খেলে থাকে। যদিও গবেষণাটি গেমিং ও শ্রবণ সমস্যার মধ্যকার একটি সংযোগ তুলে ধরেছে। গবেষকরা আরো বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজনীয়তাও স্বীকার করেছেন।
গবেষকরা জানান, সীমিত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় অতিরিক্ত ভলিউমে দীর্ঘমেয়াদি গেমিং করা হলে গেমারদের শ্রবণশক্তির জন্য স্থায়ী সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই গবেষণাটির লেখকরা গেমারদের নিরাপদ শব্দ মাত্রায় গেমিং করার জন্য সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়