১৯শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৩রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ক্রয়ে ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় চীনের

প্রতিদিনের ডেস্ক
সেমিকন্ডাক্টর খাতে চীনের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় নিরাপত্তার কথা বললেও চীনের দাবি এ খাতে দেশটির অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতেই এত বিধিনিষেধ। তবে এর মধ্যেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে সেমিকন্ডাক্টর খাত পুনরুদ্ধারে গত বছর প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ক্রয়ে ৪ হাজার কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করেছে এশিয়ার দেশটি। খবর ডিজিটাইমস।
চীনের কাস্টমস বিভাগের তথ্যের বরাতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ২০২৩ সালে কম্পিউটার চিপ তৈরিতে ব্যবহৃত মেশিন ক্রয়ের হার ১৪ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা ২০১৫ সালের পর ক্রয়ের তথ্যানুসারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালে মোট আমদানি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমলেও ক্রয়ে এ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে সেমিকন্ডাক্টর খাতে দেশটির স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
চীনের চিপ কোম্পানিগুলো বর্তমানে নতুন সেমিকন্ডাক্টর কারখানাগুলোয় বড় পরিসরে বিনিয়োগ করছে। অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওঠার জন্য কোম্পানিগুলো প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের কোম্পানিগুলো শক্তিশালী চিপ তৈরিতে ব্যবহৃত উন্নত মেশিন ও প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছে না, যা দেশটির ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তি খাতের বিকাশে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে নেদারল্যান্ডস থেকে সরঞ্জাম ও মেশিন আমদানি বাড়িয়েছে চীন। এ নিষেধাজ্ঞার কারণে সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশনের মতো কোম্পানিগুলোর আপডেটেড মেশিন বা যন্ত্র ক্রয়ে বাধা দেবে।
চীনা কাস্টমসের তথ্যানুযায়ী, গত ডিসেম্বরে নেদারল্যান্ডস থেকে লিথোগ্রাফি সরঞ্জাম আমদানি ২০২২ সালের তুলনায় ১ হাজার শতাংশের বেশি বেড়েছে, সামগ্রিকভাবে যা ১১০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। চলতি মাস থেকেই প্রযুক্তিপণ্য, যন্ত্রাংশ বিক্রিতে নেদারল্যান্ডসও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে যাচ্ছে। এ কারণেই ক্রয়ের হার বেড়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের আরো আগে এএসএমএল হোল্ডিংস চিপ তৈরিতে ব্যবহৃত উন্নত কিছু মেশিন রফতানি বন্ধ করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চীনে মেশিন সরবরাহ বন্ধের এ উদ্যোগ নেয়া হয়।
চীনের প্রযুক্তিপণ্য, চিপ, যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ব্যবসা ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি বিকল্প পণ্য বাজারজাত করছে। এর অংশ হিসেবে চলতি বছরের সিইএস সম্মেলনে চীনের জন্য দুটি নতুন চিপ উন্মোচন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানি ইন্টেল। প্রসেসর দুটি হলো কোর আই৭-১৪৭৯০এফ ও আই৫-১৪৪৯০এফ। আই৭ প্রসেসরটিতে ১৬টি কোর রয়েছে এবং সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৪০ গিগাহার্টজ ক্লকস্পিডে চলতে সক্ষম। বিশেষভাবে এটি চীনের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তবে আই৭-১৪৭০এফের তুলনায় এতে চারটি কোর কম রয়েছে। এছাড়া ক্যাশ ফাইল সংরক্ষণের সক্ষমতা ৩ মেগাবাইট করা হয়েছে। জেডি প্লাটফর্মের অফিশিয়াল স্টোরে প্রসেসরটির দাম ২ হাজার ৯০৯ ইয়েন।
অন্যদিকে কম সুবিধা বা কনফিগারেশনের দিক থেকে আই৫-১৪৪৯০এফ প্রসেসর বাজারজাত করা হয়েছে। এতে ১০টি কোর ও ১৬টি থ্রেড রয়েছে। এর সর্বোচ্চ ক্লকস্পিড ৪ দশমিক ৯ গিগাহার্টজ। চীনের বাজারে প্রসেসরটির মূল্য ১ হাজার ৬৫৯ ইয়েন। অন্যদিকে ৪ দশমিক ৭ গিগাহার্টজ ক্লকস্পিড ও ২০ মেগাবাইট ক্যাশ মেমোরিযুক্ত প্রসেসরের দাম ১ হাজার ৬৫৯ ইয়েন।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়