কামরুজ্জামান মুকুল, বাগেরহাট
বাগেরহাটের সরকারি প্রফল্ল চন্দ্র (পিসি) কলেজ ছাত্র সংসদের ‘কার্যকারিতা বাতিল’ ঘোষণার পর সংসদ কাযালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার কর্তৃপক্ষ সংসদ কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত কলেজ মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোনের চারতলা একাডেমিক ভবনের নিচতলার কক্ষটি তালা দিয়ে সিলগালা করে দিয়েছেন। এরআগে মঙ্গলবার কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ জিয়াউল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এক দশক আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও বিতর্কিত ওই ছাত্র সংসদ ‘গঠনতন্ত্রের ধারা-১৩ অনুযায়ী’ বাতিল করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, একাডেমিক কাউন্সিলের ৬৩তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজ-এর ২০১২-১৩ বর্ষে গঠিত ছাত্র সংসদের কার্যকারিতা ছাত্র সংসদ গঠনতন্ত্রের ধারা-১৩ অনুযায়ী বাতিল করা হলো।
অধ্যক্ষ জিয়াউল ইসলাম বলেন, আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্র সংসদ কার্যক্রম বাতিল করেছি। যেহেতু সংসদ কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে, সেহেতু সংসদ কক্ষটা পরবর্তি সংসদ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এই মর্মে ঘোষনা দিয়ে সিলগালা করা হয়েছে। কলেজ সূত্র বলছে, ২০১২ সালে এক বছর মেয়াদী এই ছাত্র সংসদ গঠিত হয়। যার ভিপি হন পিসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সরদার ইয়াছির আরাফাত নোমান। তবে মেয়াদ শেষের পরও এক দশকের বেশি সময় ধরে তারা কলেজের সংসদ কক্ষ দখলে রাখার পাশাপশি কলেজে নানাভাবে প্রভাব বিস্তারসহ সাভবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যবহত করে আসছিল। মূলত ভিপির অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার ফলে এই সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গেল রোববার ছাত্র সংসদ কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সামনে ফুলের টব ও গাছপাল ভাঙচুর করে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা। ঘটনার সাথে সংসদ নেতা ছড়িত বলে ধারাণা সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
ভাঙচুরের পর অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ জিয়াউল ইসলাম বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজ ক্যাম্পাস, ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসে ছাত্র-ছাত্রী নামধারী বহিরাগতরা অবস্থান করছে। সন্ধ্যার পর, রাতের আঁধারে কিছু অছাত্র কলেজ ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করে, তারাই এই কাজ করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দ্বা জানাই। আশা করবো প্রশাসন এ ব্যপারে ব্যবস্থা নিবে। পিসি কলেজ ছাত্র সংসদ গঠনতন্ত্রের ধারা-১৩ অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদকাল সাধারণত এক বছর। এই মেয়াদকাল সংসদের শপথ গ্রহণের দিন থেকে ধরা হয়। এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর সংসদের সকল নির্বাচিত পদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। তবে প্রয়োজন বোধের সভাপতি এর মেয়াদ এক বা একাধিক বারে অনধিক সর্বোচ্চ এক বছর বাড়িয়ে দিতে পারবেন অথবা অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
তবে সংসদের মেয়াদ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কখনো এর মেয়াদ না বাড়ালেও এক দশকের বেশি সময় ধরে কলেজে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল বর্তমান সংসদ।