প্রতিদিনের ডেস্ক
বেশকিছুদিন ধরে মিয়ানমারের জাতিগত বিদ্রোহীদের আক্রমণে দিশেহারা দেশটির জান্তা সরকার। ইতোমধ্যেই বিদ্রোহীরা বিভিন্ন এলাকা দখলে নিয়ে নিয়েছে। এমন পরিস্থিতির মুখে সমর্থন হারাচ্ছেন সামরিক অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। চাপের মুখে হ্লাইংয়ের (৬৭) বদলে বিকল্প নেতৃত্বের কথা ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন তার কট্টর সমর্থকরা। মিয়ানমারের পার্বত্য শহর পাইন ও লুইনের মূল চত্বরে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) ভিড় জমিয়েছিলেন কয়েকশ মানুষ। তারা সেখানে সন্ন্যাসী পাউক কো তাওয়ের কথা শুনছিলেন। খবর বিবিসির। ওই সন্ন্যাসী বলছিলেন, সামরিক শাসক হ্লাইংয়ের উচিত পদত্যাগ করে তার ডেপুটি জেনারেল সো উইনকে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া। ২০২১ সালে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছিলেন মিন অং হ্লাইং। এর মাধ্যমে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ উস্কে দিয়েছেন তিনি। এ কারণে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার পাশাপাশি মিয়ানমারের মানুষের ঘৃণাও কুড়িয়েছেন তিনি। এই জান্তা প্রধানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে বৌদ্ধ ধর্মযাজকদের চরম-জাতীয়তাবাদী একটি পক্ষ। আর তাদেরই সমর্থক পাইন ও লুইনের চত্বরে বক্তব্য দেয়া সন্ন্যাসী পাউক তাও। চত্বরে জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের উদ্দেশে সন্ন্যাসী তাও বলেন, “জেনারেল সো উইনের মুখের দিকে তাকান। একজন প্রকৃত সৈনিকের মুখ। মিন অং হ্লাইং পেরে উঠছেন না। তার উচিত বেসামরিক ভূমিকায় চলে যাওয়া।” জান্তা সরকারের অন্য সমর্থকরাও পাউক তাওয়ের সুরে কথা বলছেন, যারা বিরোধীদের দমনে সামরিক বাহিনীর ক্রমাগত অসমর্থতায় হতাশ হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পাউক তাও রাজি হননি বলে জানিয়েছে বিবিসি। মিয়ানমারের ডিফেন্স সার্ভিস একাডেমি রয়েছে পাইন ও লুইনে । সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সেখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ও সন্ন্যাসীদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন কিছু নয়। সন্ন্যাসীদের রাজনৈতিক এবং প্রায়শ সরকারবিরোধী আন্দোলনেও সক্রিয় দেখা যায়। ১৯৩০ এর দশকে উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৮৮ ও ২০০৭ সালের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহেও তাদের সক্রিয়তা ছিল। সবশেষ ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের বিরোধীতা করেছেন কেউ কেউ। সন্ন্যাসীর পোশাক ছেড়ে তুলে নিয়েছেন অস্ত্রও। আবার কেউ কেউ সামরিক জেনারেলদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। এসব সন্ন্যাসীরা মনে করেন, বৌদ্ধধর্ম ও বার্মিজ সংস্কৃতি উভয়কেই বাইরের প্রভাব থেকে রক্ষা করতে হবে।