১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

শ্যামনগরে পেরিফেরীভুক্ত জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মানের হিড়িক

উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নওয়াবেঁকী বাজারের ফেরিফেরিভুক্ত জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মানের হিড়িক পড়েছে।তোহা বাজার এবং চান্দিনা ভিটা ব্যবহার বিধি উপেক্ষা করে রাতারাতি সেখানে একের পর এক আধা পাকা, পাকা এমনকি দ্বিতল ভবনসহ নকশা বহিঃভুর্ত স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। সরকারি বিধি ও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র স্থাপনা নির্মানের ফলে বাজারের প্রবেশপথ ও পায়ে চলা রাস্তাসহ গলিসমুহ সংকুচিত হচ্ছে।খোলপেটুয়া নদী তীরের ঐতিহ্যবাহী নওয়াবেঁকী বাজারের পেরিফেরিভুক্ত এসব জায়গা অবৈধভাবে প্রকাশ্যে দখল হলেও কতৃপক্ষ ফিরেও তাকাচ্ছে না। ক্রেতা সাধারন ও স্থানীয়দের অভিযোগ গোটা প্রক্রিয়ার সাথে ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তাসহ তার দপ্তরের লোকজন জড়িত। একের পর এক নকশা বহিঃভুর্ত এবং অনুমোদনহীন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠায় চলাচলের জায়গা কমার পাশাপাশি ক্রেতা সাধারন আর প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা অসহনীয় সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায় বাজারের উত্তর পাশে অবস্থিত তোহা বাজারের এক শতাংশ জায়গা দখল করে আধা পাকা স্থাপনা গড়ে তুলেছে জনৈক আশরাফুল ইসলাম। আবার মুল বাজারের প্রবেশমুখে ডান পাশে চান্দিনা ভিটায় নিজের কাঁচা স্থাপনা কাপড়ে ঢেকে ভিতরে চার কক্ষের একতলা ভবন গড়ে তুলেছেন ইউপি সদস্য খসরুজ্জামান। একইভাবে ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ও মাছ বাজারের দক্ষিন অংশে পেরিফেরির চান্দিনা ভিটায় আধা পাকা স্থাপনা নির্মানের কাজ শুরু করেছেন রফিকুল ইসলাম রফু, ডাঃ কনিকা ও বিমল মন্ডলসহ ছয়জন।তবে শুধুমাত্র উল্লেখিত নির্দিষ্ট জায়গাগুলো নয়। বরং গত তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে নওয়াবেঁকী বাজারের পেরিফেরিভুক্ত এমন অসংখ্য জায়গায় অন্তত সাতাশটি অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে তোহা বাজার ব্যবস্থাপনা এবং চান্দিনা ভিটা বন্দোবস্ত আইনের ন্যুনতম শর্ত অনুসরণ করা হয়নি।স্থানীয়দের অভিযোগ পেরিফেরিভুক্ত জায়গা তদারকি এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তার। তবে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠলেও তিনি সম্পুর্ন নিরব। বিড়ালাক্ষী গ্রামের আরশাদ আলী বলেন যত্রতত্র স্থাপনা নির্মানের ফলে হাটের দিন বাজারের মধ্যে চলাচল রীতিমত দুরুহ হয়ে পড়ে। জায়গা সংকটের কারনে তোহা বাজারের প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা রাস্তার উপর বেচাকেনা করতে বাধ্য হওয়ায় কয়েকটি সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।নওয়াবেঁকী বাজারের ব্যবসায়ী বাচ্চু মোড়ল বলেন পেরিফেরিভুক্ত জায়গা এক বছরের জন্য ইজারা নেয়া ও কাঁচা স্থাপনা নির্মানের আইন রয়েছে। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে একের পর এক পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা গড়ে তোলায় বাজারে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সবকিছু ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তার সামনে হলেও তিনি ন্যুনতম ভ্রুক্ষেপ করছে না। এভাবে চললে অচিরেই শত বছর পুরাতন নওয়াবেঁকী বাজারে হাট-বাজারের অস্থিত্ত্ব নিশ্চিহ্ন হবে পেরিফেরির জায়গায় একতলা ভবন নির্মানের বিষয়ে ইউপি সদস্য খসরুজ্জামান বলেন, আইন-কানুন সম্পর্কে জানিনা, অনুমোদন পেয়ে ঘর করেছি। ছাদ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,কোন বাধাঁ আসেনি বলে করেছি, অন্য কিছু জানতে চাইলে আপনি নায়েবের কাছে শুনেন।তোহা বাজারের মধ্যে আধা পাকা স্থাপনা নির্মানের বিষয়ে আশরাফুল ইসলাম বলেন, নায়েব সাহেব কাগজ ঠিক আছে বলার পর আমি ঘর করেছি। তোহা বাজারে স্থাপনা নির্মান অবৈধ জানানো হলে তিনি বলেন, নায়েবের সামনে ঘর করেছি, তাই যা কিছু বলার উনি বলবেন।
ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনের সুযোগে কেউ কেউ এসব স্থাপনা গড়ে তুলেছে। পরবর্তীতে কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখি কি করা যায়’।অবৈধভাবে নির্মিত কিছু স্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি সাংবাদিকদের সহায়তা চাইবেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।উপজেলা সহকারী কমশিনার (ভূমি) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দ্রুতই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। ইতিপুর্বে দখল করা তোহা বাজারের জায়গা উম্মুক্ত করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, যারা শর্ত লংঘন করে পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা তৈরী করেছে আইন অনুযায়ী তাদের বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়