২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৫ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর খাতে আয় কমেছে ৮.৮ শতাংশ

প্রতিদিনের ডেস্ক
এন্টারপ্রাইজ ও গ্রাহক পর্যায়ে ব্যয় কমায় ২০২৩ সালে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর খাতের আয় কমেছে। বছরওয়ারি হিসাবে এর হার ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর আয়ের দিক থেকে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর অবস্থানও পরিবর্তন হয়েছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাজার বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, চলতি বছর এ খাতের আয় পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। আর এতে বড় অবদান থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই)। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্যামসাংকে টপকে শীর্ষে উঠে এসেছে ইন্টেল। মেমোরি খাতের পাশাপাশি স্মার্টফোন ব্যবসায় লোকসানের কারণে শীর্ষস্থান হারিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টটি।
এআইয়ের প্রভাবে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সেমিকন্ডাক্টর খাতের আয় ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে আশাবাদী বাজার বিশ্লেষকরা। এর মাধ্যমে গত বছর অ্যাডভান্স মাইক্রো ডিভাইসেসের (এএমডি) পর ভালো অবস্থানে ছিল এনভিডিয়া। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, সামনের বছরগুলোয় দুটি কোম্পানি এআইয়ের সহায়তায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাড়াতে সক্ষম হবে।
বাজার বিশ্লেষকরা জানান, গত বছর সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো তাদের নীতিমালা, কৌশল ও লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করেছে। পাশাপাশি এআইয়ের বিকাশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য তাদের পণ্যের মজুদ নিয়ে কাজ করেছে। কাউন্টারপয়েন্টের সেমিকন্ডাক্টর রেভিনিউ ট্র্যাকারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ২০ সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানির মধ্যে মাত্র ছয়টি বছরওয়ারি হিসাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
সেমিকন্ডাক্টরের মধ্যে মেমোরি খাতের আয় সবচেয়ে বেশি কমেছে। ২০২৩ সালে এ খাতের আয় বছরওয়ারি হিসাবে ৪৩ শতাংশ কমেছে। এছাড়া মোট বাজারের ৭১ শতাংশজুড়ে ২০টি কোম্পানির অবদান ছিল। যেখানে ২০২২ সালে এ হার ছিল ৭৬ শতাংশ।
গত বছর সেমিকন্ডাক্টর খাতের আয়ের দিক থেকে শীর্ষে উঠে আসে ইন্টেল। যদিও কম্পিউটার ও সার্ভার ব্যবসায় কোম্পানিটির রফতানি বছওয়ারি হিসাবে দুই অংক অবনমনের মধ্যে ছিল। স্যামসাংও ডির‍্যাম ও ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ বাজারে লোকসানে ছিল। ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর এ খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি কোম্পানিটির আয় কমেছে ৩৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, কম্পিউটার, সার্ভার ও স্মার্টফোন খাতে চাহিদা কমে যাওয়ায় মেমোরির বাজার বেশি প্রভাবিত হয়েছে। এছাড়া বেশি পণ্যের মজুদ মেমোরির বাজার অবনমনের অন্যতম কারণ। মেমোরি খাতের অন্যতম দুই কোম্পানি এসকে হাইনিক্স ও মাইক্রনের আয় বছরওয়ারি হিসাবে যথাক্রমে ৩৩ ও ৩৬ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে এআইয়ের ব্যবহার বাড়ায় ২০২৩ সালজুড়ে আলোচনায় ছিল এনভিডিয়া। কাউন্টারপয়েন্টের প্রতিবেদন ও বিশ্লেষকদের অভিমত, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন খাত নিয়ন্ত্রণে কোম্পানিটি এগিয়ে থাকবে। মূলত এআই ও উচ্চ ক্ষমতার কম্পিউটিংয়ে এনভিডিয়ার সাধারণ জিপিইউ বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর আয়ের দিক থেকে এনভিডিয়া ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখতে পেয়েছে এবং প্রথমবারের মতো শীর্ষ পাঁচে উঠে আসে।
কাউন্টারপয়েন্টের সিনিয়র বিশ্লেষক উইলিয়াম লি বলেন, ‘সাধারণ দৃষ্টিতে আমাদের বিশ্বাস ২০২৪ সালে সেমিকন্ডাক্টর খাতের অগ্রগতিতে এআইয়ের ভূমিকা বেশি থাকবে। এছাড়া পণ্য সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক হয়ে আসবে, যে কারণে মেমোরি খাতও আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।’ তিনি আরো জানান, গাড়ি নির্মাণ খাতও চলতি বছর সেমিকন্ডাক্টর খাতে প্রবৃদ্ধি ফিরিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়