প্রতিদিনের ডেস্ক
‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ শিরোনামে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে শুরু হচ্ছে তিন দিনের বাজুস ফেয়ার-২০২৪। এই মেলায় মোট ৪১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলার উদ্বোধনী দিনে ‘বাজুস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অবস্থিত বাজুস কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মেলার শিরোনাম ‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ দেওয়ার কারণ হিসেবে বাজুসের মুখপাত্র ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, আমাদের পরিবারের অনেক সদস্য আছেন যারা ছয়-সাত হাজার টাকা ভরি সোনা কিনেছিলেন, এখন তার মূল্য লাখ টাকা হয়ে গেছে। সোনা ছাড়া যে কোনো পণ্যই আপনি কেনেন তার রিটেল ভ্যালু এত থাকে না।
তিনি বলেন, আজ আপনি একটা টেলিভিশন, ফ্রিজ কিনলে পরের দিন বিক্রি করতে গেলে মূল্য অর্ধেক হয়ে যাবে। কিন্তু সোনা এমন জিনিস যেটা মানুষ সঞ্চয় হিসেবে নিয়েছে। গরিব, ধনী, মধ্যবিত্ত সবাই এটা কেনে। ধনী দেশগুলো সোনাকে রিজার্ভ হিসেবে নিয়েছে। এ জন্য আমাদের প্রতিপাদ্য সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফেয়ার অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান উত্তম বণিক বলেন, আগামী ৮, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মেলার পাশাপাশি একই স্থানে আমরা ‘বাজুস জুয়েলারি সামিট ২০২৪’ এর আয়োজন করেছি। এই সামিটে ১০টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও আগে ঘোষিত ‘বাজুস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে মেলায় অংশ নেওয়া জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হবে। এসব অনুষ্ঠানে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, জাতীয় সংসদের সদস্য, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, শিল্পী, অভিনেতা, অভিনেত্রী, মডেল, শোবিজ তারকাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সেলিব্রিটি অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়, বাজুস মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় প্রবেশ টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকিট লাগবে না। এছাড়াও জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে বিশেষ অফার দিচ্ছে। এবার মেলায় ৯টি প্যাভিলিয়ন, ১৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ১৫টি স্টলে দেশের স্বনামধন্য ৪১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।
মেলায় প্যাভিলিয়নে অংশ নেওয়া ৯ প্রতিষ্ঠান হলো- ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড, অলংকার নিকেতন (প্রা.) লিমিটেড, আমিন জুয়েলার্স লিমিটেড, ভেনাস জুয়েলার্স লিমিটেড, কুঞ্জ জুয়েলার্স, রয়েল মালাবার জুয়েলার্স (বিডি) লিমিটেড, আপন জুয়েলার্স, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেড ও রিজভী জুয়েলার্স।
মিনি প্যাভিলিয়নে অংশ নেওয়া ১৭ প্রতিষ্ঠান হলো- ডায়মন্ড বাজার অ্যান্ড গোল্ড, গৌরব জুয়েলার্স, আলভী জুয়েলার্স, আই কে জুয়েলার্স লিমিটেড, চৌধুরী গোল্ড, রিয়া জুয়েলার্স, আফতাব জুয়েলার্স, ডায়মন্ড হাউজ, রয়েল ডায়মন্ড, দি ডায়মন্ড স্টোর, ড্রিমজ ইন্সট্রুমেন্ট টেকনোলজি, রাজ জুয়েলার্স লিমিটেড, জারা গোল্ড, জায়া গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড, সাস ইন্টারন্যাশনাল, দি পার্ল ওয়েসিস জুয়েলার্স ও ডি ডামাস দি আর্ট অব জুয়েলারি।
স্টলে অংশ নেওয়া ১৫ প্রতিষ্ঠান হলো- গোল্ডেন ওয়ার্ল্ড জুয়েলার্স, দি আই কে জুয়েলার্স, গীতাঞ্জলি জুয়েলার্স, আয়াত ডায়মন্ডস, সিরাজ জুয়েলার্স, পাপড়ি জুয়েলার্স, ডায়মন্ড প্যালেস, ডায়মন্ড স্কয়ার, নিউ বসুন্ধরা জুয়েলার্স, রাজেশ্বরী, ডি গোল্ড প্যাশন, বাংলাদেশ সায়েন্টিফিক ইন্সট্রুমেন্ট কোম্পানি, জেমস গ্যালারি অ্যান্ড ডায়মন্ড, খোকন জুয়েলার্স ও আরএন মাইক্রোটেক।
মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, নিরাপত্তার জন্য এর থেকে বেশি স্টল দেওয়া সম্ভব নয়। আর উন্মুক্ত স্থানে এ মেলা আয়োজন করা সম্ভব না। জায়গা ছোট হলেও আমাদের দেশে উৎপাদিত সকল জুয়েলারি পণ্য উপস্থাপন করতে পারবো। যাদের প্রতিষ্ঠান বড় এবং বিশ্বব্যাপী সুনাম আছে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান, বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন, বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, ভাইস চেয়ারম্যান ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নারায়ণ চন্দ্র দে, সদস্য মো. লিটন হাওলাদার, সদস্য মো. মনির হোসেন, সদস্য মো. আজাদ হোসেন প্রমুখ।