১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

সূচকের বড় লাফ, হাজার কোটি টাকা ছাড়ালো লেনদেন

প্রতিদিনের ডেস্ক
আতঙ্ক কেটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। ধারাবাহিকভাবে মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি, লেনদেনের গতিও বাড়তে শুরু করেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমে আসছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে দুই ডজন প্রতিষ্ঠান। সেইসঙ্গে লেনদেন বেড়ে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এতে পাঁচদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা কমে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম ৩০-৪০ শতাংশ কমে যায়।
এখন সেই সব প্রতিষ্ঠানগুলোর দাম বাড়াতে দেখা যাচ্ছে। তবে মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম যে হারে কমেছে, এখন দাম বাড়ার হার তার থেকে কম। ফলে এখনো বড় লোকসানে রয়েছেন বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত।
ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ২৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৭১টির। আর ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। লেনদেনের বেশিরভাগ সময়জুড়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল পরিমাণে ক্রয় আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয় আদেশর ঘর। এছাড়া আরও ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৫ শতাংশের ওপরে বেড়েছে।
প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখানোর দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১২২ কোটি ৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৭৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৪২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ৫৮ কোটি ২৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের ৫৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৩ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এনভয় টেক্সটাইল, আইএফআইসি ব্যাংক, অলিম্পিক এক্সসরিজ, মালেক স্পিনিং, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, আফতাব অটোমোবাইল এবং প্যাসেফিক ডেনিমস।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৭৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৬টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়