এমামুল হাসান সবুজ, ঝিকরগাছা
গোলাপ ফুল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। গোলাপ ফুলের একেকটি পাপড়িতে ফুটে উঠেছে জাতির পিতার মুখমণ্ডলের আকৃতি। হাতের এমন কারুকার্য দেখলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। এমনই এক দৃশ্য দেখা গেছে যশোরের গদখালিতে এক ফুল উৎসবে। সরেজমিনে গদখালির পানিসারা ফুল মোড়ের সেই উৎসব প্রাঙ্গণে দেখা যায়, বিভিন্ন ফুলের পসরা সাজিয়ে একাধিক স্টল সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি স্টলে দেখা যায়, গোলাপ ফুল দিয়ে নিখুঁতভাবে বঙ্গবন্ধুর ছবি তৈরি করেছেন নারী ফুলচাষিরা। ফুল মেলায় আগত দর্শকদের নজরও কাড়ছে ছবিটি। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ ফুলের তৈরি প্রায় ৩০ রকমের পণ্যের সমাহার দেখা গেছে। সবগুলো পণ্য ফুলের তৈরি, দেখতেও অসাধারণ। এর মধ্যে রয়েছে খেজুর পাতার কড়াই, খেজুর পাতার বালতি, খেজুর পাতার টুনি, খেজুর পাতার হাড়ি, গোলাপ ফুল দিয়ে তৈরি রোজ সাবান, ফুল দিয়ে তৈরি চুরি, কলম, চিরুনি, প্রিচ, মোবাইলের সামগ্রী, চাবির রিং ইত্যাদি। দেলোয়ার হোসেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ফুল দিয়ে এতো সুন্দর ছবি তৈরি করা যায় এটা না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়। অনেক সুন্দর হাতের কাজ। এই হাতের কাজ এখানকার নারীদের অনেক উপরের দিকে নিয়ে যাবে। রেহেনা পারভিন নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, প্রথমে ছবিটি দেখে মনে হয়েছে আর্ট করা, পরে শুনলাম এটি ফুলের তৈরি। শুধু ছবি নয়, চিরুনি, কলম, সবই ফুল দিয়ে তৈরি, সত্যি অসাধারণ হাতের কাজ। গত বুধবার অনুষ্ঠিত মেলায় সমবায় সমিতি নামের এ স্টলটিতে ফুল দিয়ে এমন কারুকার্য করেছেন রাবেয়া খাতুন, খাদিজা খাতুন, জেসমিন নাহার, তহমিনা আক্তার, লাকিয়া খাতুন, খালেদা আক্তারসহ মোট ১৫ জন নারী সদস্য। রাবেয়া খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবিটি সম্পূর্ণ গোলাপ ফুল দিয়ে তৈরি। ফুল শুকিয়ে এটিকে তৈরি করা হয়েছে। এতে সময় লেগেছে ২-৩ দিন। মেলায় অনেক দর্শনার্থী আসছে, তাদের বেশি নজর কাড়ছে এটি। খাদিজা খাতুন নামে আরেক সদস্য বলেন, একটি সংস্থা আমাদের প্রশিক্ষণ দেয়। এরপর আমরা এই গদখালির নারী ফুলচাষিরা একত্রিত হয়ে একটি সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করি। এরপর থেকেই আমরা ফুল দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করি। বাদ দেওয়া অনেক ফুল দিয়েও কারুকার্য করা যায়। নারী ফুলচাষিসহ পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে এ সমবায় সমিতি। এ সমিতির নারীরা ফুল দিয়ে নানা আসবাবপত্র এবং পণ্য তৈরি করে তা বিভিন্ন মেলা এবং প্রদর্শনীতে বিক্রি করে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। প্রশিক্ষণ দেওয়া সংস্থাটির মাঠ কর্মকর্তা মাহবুল রহমান বলেন, এখানকার ফুলচাষি নারীদের এই ফুলের কারুকার্যের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য তাদেরকে স্বাবলম্বী করা।