১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

বৃষ্টির অজুহাতে নিয়ন্ত্রণহীন সবজির বাজার

প্রতিদিনের ডেস্ক
বর্তমান বাজারে সব ধরনের দ্রব্যের দামই রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। কম দামে পণ্য পাওয়া যায় হাতে গোনা কয়েকটি। এমন চলতে থাকা বাজারে সবজির দামও নিয়ন্ত্রণহীন। কখনও বাড়ছে আবার কখনও কমছে। একদিকে দাম বাড়াতে ছুতো খুঁজে বেড়ান ব্যবসায়ীরা, অন্যদিকে চাপে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
ক্রেতাদের অভিযোগ, কেবল দাম বাড়ানোর ধান্দায় থাকেন ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে ব্যবসায়ীদের যুক্তি হচ্ছে কাঁচা সবজির দাম অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে, তাই এটা ওঠানামা করবেই।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর এক নম্বরের কাঁচা বাজার সরেজমিনে দেখা যায় বর্তমান বাজারের এসব পরিস্থিতি।
এদিন দেখা গেছে, বাজারে শিম ৬০ থেকে ৮০, শালগম ৫০, টমেটো ৭০, পেঁয়াজকলি ৪০, মটরশুঁটি ১০০, সাদা মুলা ৪০, লাল মুলা ৫০, দেশি গাজর ৫০, লম্বা বেগুন ১০০, সাদা গোল বেগুন ৯০, কালো গোল বেগুন ৯০, শসা ৯০, ক্ষিরাই ৭০, উচ্ছে ১০০, পেঁপে ৫০, মিষ্টিকুমড়া ৪০, ঢ্যাঁড়স ১০০, চিচিঙ্গা ৮০, ধুন্দল ৭০, বরবটি ১০০, কচুর লতি ৮০, কচুরমুখী ১০০, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ১০০ ও ধনেপাতা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে প্রতিটি লাউ ১০০ টাকা, ফুলকপি ৫০, বাঁধাকপি ৫০ ও ব্রকলি ৬০ করে বিক্রি হচ্ছে। বেশ কিছু সবজির দাম বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে পেঁপের দাম বেড়েছে ১০ টাকা ও উচ্ছের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা।
দাম কমাতে ভুলে যান ব্যবসায়ীরা
বাজারে দ্রব্যমূল্য প্রতিনিয়তই ওঠানামা করতে থাকে। তবে কোনও পণ্যের যে পরিমাণ দাম বাড়ে, কমানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের থাকে নানা যুক্তি। এতে পণ্যের দাম ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকে।
বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, কোনও একটা কিছু দাম হুট করে ২০ থেকে ৩০ বাড়িয়ে তারপর হয়তো সেটা পাঁচ টাকা কমানো হয়। এতে কি আসলে দাম কমে? দাম বাড়ানোর সময় ব্যবসায়ীরা তৎপর, কিন্তু কমানোর বেলায় ভুলে যান। এভাবেই চলছে আমাদের বাজার পরিস্থিতি।
বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী হারুনুর রশিদ বলেন, সবজির দাম তো কমছে না। ৩০ টাকা বাড়িয়ে ৫ টাকা কমানোকে তো দাম কম বলা যায় না। গত সপ্তাহে উচ্ছে কিনেছি ৭০ টাকায়, আজ সেটা ১০০ টাকা। পেঁপে কিনেছি ৪০ টাকায়, আজ ৫০ টাকা। কাঁচাবাজারে এই দামদরের কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই।
বৃষ্টির অজুহাত বিক্রেতাদের
সবজি বিক্রেতা আবু হানিফ বলেন, কাঁচামালের দাম কখনও এক জায়গায় স্থির থাকে না। এটা ওঠানামা করবেই নানা কারণে।
আরেক বিক্রেতা বলেন, গত দুই দিনের বৃষ্টির কারনে সবজির দাম বেড়ে গেছে। এখানে আমাদের কোনও হাত নেই।
ক্রেতারা বলছেন ওসিলা
বৃষ্টিতে সবজির দাম বেড়েছে, এই প্রসঙ্গে বাজার করতে আসা রফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা আসলে দাম বাড়ানোর ওসিলা খোঁজে। কতক্ষণ বৃষ্টি হয়েছে গত দুই দিনে যে সবজির দাম বেড়ে গেলো? সব এলাকায় তো বৃষ্টিই হয়নি!
এ ছাড়া আজ মানভেদে পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৪০ টাকা, দেশি রসুন ২৬০-২৮০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, ভারতীয় আদা ২২০, চায়না আদা ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. হালিম বলেন, পেঁয়াজের দাম হয়তো আরও বেড়ে যাবে। তবে আলুর দাম কমার সম্ভাবনা হয়েছে।
আলু কিনতে এসে এক ক্রেতা বলেন, এই সেজনে আলুর দাম থাকার কথা ১৫ টাকা কেজি সেটা কিনতে হচ্ছে ৪০ টাকা।
দাম বেড়েছে মাছ-মাংসের
এ ছাড়া আজকের বাজারে ইলিশ ওজন অনুযায়ী ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা, রুই ৪০০ থেকে ৭০০, কাতল ৪৫০ থেকে ৫০০, কালিবাউশ ৪০০ থেকে ১২০০, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১২০০, কাঁচকি ৪৫০, কই ২৫০ থেকে ১৫০০, পাবদা ৪০০ থেকে ৭০০, শিং ৪০০ থেকে ১২০০, বেলে ৬০০ থেকে ১২০০, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০, মেনি ৫০০ থেকে ৮০০, কাজলি ১১০০ থেকে ১২০০, বোয়াল ৬০০ থেকে ১২০০, রূপচাঁদা ১০০০ থেকে ১২৫০ ও শোল ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, কক ২৬৫ থেকে ২৮০, লেয়ার ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ ও গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির লাল ডিম ১৩৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১৩০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
স্বাভাবিক মুদিপণ্যের দাম
আজ মুদি দোকানের সব পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। ছোট মুসর ডাল ১৩৫, মোটা মুসর ডাল ১১০, মুগডাল ১৭৫, খেশারি ডাল ১১০, বুটের ডাল ১০০, ছোলা ১১০, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৩, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫, খোলা চিনি ১৪০, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ এবং খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়