প্রতিদিনের ডেস্ক
ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহনাজ তাবাসসুম মিশু ও তার স্বামী আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। কিশোরীকে অনৈতিক কাজে বাধ্যসহ নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ও সাভার থানার উপপরিদর্শক মো. জহুরুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আজ শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) আদালতের সাভার থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, পড়ালেখার সুবাধে তার বাসায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী ভাড়াটিয়া হিসেবে একা থাকতেন। মিশুর সঙ্গে তার পরিচয় ও সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে মিশু তাকে প্রস্তাব দিয়ে বলেন যে, বড়লোকের ছেলেদের সঙ্গে মেলামেশা করলে অনেক টাকা পাওয়া যাবে। প্রস্তাবে রাজি না হলেও জোরপূর্বক তাকে বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বাধ্য করতেন। আসামি মিশু ও তার স্বামী আতিকুর রহমান ওই কিশোরীকে দিয়ে বিভিন্ন লোকদের সঙ্গে খারাপ কাজ করাতে না পারায় তারা প্রচুর মারধর করতেন। মাঝে মধ্যেই ভুক্তভোগীকে সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাকা দিতেন। আসামি আতিকুর রহমান বিভিন্ন সময় তাকে বিভিন্ন সময় জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিশোরী যাতে কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন সেজন্য আসামি মিশু মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। কিছু দিন পর গত বছরের ২৪ জুলাই মিশু ও তার স্বামী আতিকুর জোরপূর্বক ভুক্তভোগী কিশোরীর নগ্ন ছবি ধারণ করার চেষ্টা করেন। তখন কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন আসামি আতিকুর। পরদিন ২৫ জুলাই রাতে কিশোরীকে অপরিচিত ছেলেদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য জোর করেন তারা। রাজি না হওয়ায় তখন আতিকুর সিগারেটের আগুন দিয়ে তাকে ছ্যাকা দেন এবং মারধর করেন। পরে মিশু ও আতিকুর ভোর ৬টায় কিশোরীকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাসার ৫ম তলার বেলকুনি থেকে নিচে ফেলে দেন। ভুক্তভোগী বেঁচে গেলেও তার কোমড়ের হাড় ভেঙে যায়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৯ আগস্ট সাভার উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন নিজ বাড়ি থেকে মিশু গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারের পর ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে’ সংগঠন থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। ওইদিন বিকেলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পরদিন ২০ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ২৩ আগস্ট ঢাকার সিনিয়ার জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ২৭ আগস্ট আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে কারামুক্ত হন। এ মামলায় মিশুর স্বামী আতিকুর কারাগারে আটক রয়েছেন।