প্রতিদিনের ডেস্ক
উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি ড্রয়ের দিকে যাচ্ছিলো। ঠিক সেই মুহূর্তে ডেডলক ভাঙেন নেপাল ম্যাচে বাংলাদেশের জোড়া গোলের নায়ক মোসাম্মত সাগরিকা। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে এই ফরোয়ার্ডের দারুণ লক্ষ্যভেদে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। রবিবার ১-০ গোলে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়েছে তারা। দিনের আগের ম্যাচে নেপাল ১-০ গোলে হারায় ভুটানকে। দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। এক ম্যাচ হেরে ভারত ৩ পয়েন্ট পেয়েছে। নেপালেরও ৩ পয়েন্ট। আর টানা দুই ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে ভুটানের। মঙ্গলবার তাদের বিপক্ষে লিগ পর্বে শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আর ভারত ও নেপাল ম্যাচের জয়ী দল খেলবে ফাইনালে। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আজ রবিবারও সমর্থকরা এসেছিলেন ভুভুজেলাসহ নানান সাজে। ম্যাচে ভালোই উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে প্রথমার্ধে গোল দিতে পারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। কৃত্রিম আলোতে শুরু থেকে স্বাগতিকদের ওপর চড়াও হতে থাকে ভারত। হাইলাইন ডিফেন্স করে খেলার চেষ্টা ছিল। লিন্ডা-নেহারা লাল-সবুজের রক্ষণ ভেদ করার চেষ্টা করেছে বারবারই। কিন্তু সফল হতে পারেনি। বিপরীতে বাংলাদেশ প্রতি আক্রমণে উঠে খেলে গোল করতে সক্ষম হয়নি। ম্যাচ ঘড়ির ৯ মিনিটে ভারত সুযোগ পায়। সুলান জানা বক্সের ভেতরে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। তার আগেই জটলা থেকে ক্লিয়ার করেন স্বাগতিকদের এক ডিফেন্ডার। তিন মিনিট পর নেহার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট গোলকিপার স্বর্ণারানী মন্ডল বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বলের দিক পরিবর্তন করে গোল বাঁচান। বাংলাদেশ ফাঁকে ফাঁকে আক্রমণ শানাতে চেষ্টা করেছে। ৩৭ মিনিটে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আসে। তবে সুরমা জান্নাতের হেড অনেক দূর দিয়ে গিয়ে সমর্থকদের হতাশ করে। ৪৪ মিনিটে আবার ভারতের নেহা বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শট নিলেও তা সরাসরি গোলকিপারের হাতে জমা পড়ে। একটু পর একই দলের লিন্ডার শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ গোল পেতে পারতো। আফঈদার ফ্রি-কিক অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে গিয়ে গোল হয়নি। বিরতির পর ছিল বাংলাদেশের আধিপত্য। তবে গোল পেতে অনেক সময় লেগেছে, কোনও সময় ভারতের গোলকিপার কিংবা ডিফেন্ডাররা বাধা হয়ে দাঁড়ান। শুরুতে স্বপ্না রানীর ক্রস ভারতের এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করে সুযোগটা কাজে লাগাতে দেননি। ৬৬ মিনিটে স্বপ্নার কর্নারে সুরমা জান্নাতের হেড পোস্টে ঢোকার আগেই গোলকিপার কোনোমতে তালুবন্দী করেন। ৭২ মিনিটে সতীর্থের কর্নারে একদম পোস্টের সামনে বল পড়লেও কেউই পা ছোঁয়ানোর জন্য জায়গা মতো ছিলেন না, আফঈদা অন্য প্রান্তে বল পেয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে মেরে আবারও হতাশ করেন। ৮০ মিনিটে ভারত সুযোগ পায়। স্বাগতিকদের গোলকিপার পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ভারতের একজনের লক্ষ্যে নেওয়া শট বাংলাদেশের ডিফেন্ডার বিপদমুক্ত করেন। একটু পর স্বাগতিকদের একজনের নেওয়া শট গোলকিপার তালুবন্দী করেন। ৮২ মিনিটে বাংলাদেশ গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলো। স্বপ্নার ফ্রি-কিক থেকে সুরমা জান্নাতের হেড গোলকিপার ডান দিকে শরীর ঝুকিয়ে কোনোমতে রক্ষা করেন। তবে বল তার তালু গলে বের হলেও তাতে কেউ পা ছোঁয়াতে পারেনি। ৮৬ মিনিটে গোলকিপারের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে যান মুনকি আক্তার, একাই বক্সে ঢুকে আনিকা দেবির গায়ে মেরে দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। যোগ করা সময়ে মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে সাগরিকা দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে গতির ঝলক দেখিয়ে বক্সে ঢুকে গোলকিপারের পাশ দিয়ে জড়িয়ে দেন জালে। তাতেই স্টেডিয়ামে দর্শকদের উল্লাস।