প্রতিদিনের ডেস্ক
পতন থেকে বেরিয়ে টানা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। একই সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে লেনদেনের গতি। আগের কার্যদিবসের মতো সোমবারও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসেই সূচকের বড় উত্থান হলো।
এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে দুই বাজারেই সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে।
সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর শেয়ারবাজারে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের দেখা মিললো। অর্থাৎ ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের সময় ১০ মিনিট গড়ানোর আগেই বেশিকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। এতে লেনদেনের ২৭ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ পয়েন্ট কমে যায়।
অবশ্য অল্প সময়ের ব্যবধানেই আবার ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ২৬১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৩টির। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬২টির দাম ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে হল্টেড (একদিনে যতটা বাড়া সম্ভত ততোটাই বেড়েছে) হয়েছে ২৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার।
অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখানোর দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩২২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার দিনে ডিএসইতে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৫৪ কোটি ৭৮ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৫৮০ কোটি ৪০ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর আগে ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৮১০ কোটি ৫২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। এর পর একদিনে আর এতো লেনদেন হয়নি।
এই লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিডি থাই অ্যালুমেনিয়ামের ৫৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, আইটিসি, আইএফআইসি ব্যাংক, এনভয় টেক্সটাইল, ফরচুন সুজ এবং অলিম্পিক এক্সসরিজ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৮৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭২টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা।