আব্দুর রাজ্জাক বুলি, পাইকগাছা
খুলনার পাইকগাছায় কৃষিবিদরা বলছেন, লবন পানির চিংড়ি ঘেরের অনাবাদি জমিতে কৃষক হারুনের বীনা-৯ সরিষা চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করলে এ অঞ্চলের কৃষিতে বিপ্লব ঘটতে পারে। সোমবার দুপুরে উপজেলার কপোতাক্ষ নদ ঘেষা হিতামপুর বিলে বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকাল বিনা সরিষা-৯এর সম্প্রসারণের লক্ষে মাঠ দিবসে কৃষি বিদরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। পরমানু কৃষি ইনিস্টিটিউ’ট বিনা উপকেন্দ্র সাতক্ষীরা-৪০০ এর বাস্তবায়নে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায়-৮০ জন কৃষক-কৃষানী এ মাঠ দিবসে অংশ গ্রহন করেন।
খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিঃ পরিচালক কৃষিবিদ মোহন কুমার ঘোষ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় মাঠ দিবসে ভার্চুয়াল যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের বীনা-মহাপরিচালক ড,মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রো টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড,মোঃ সরোয়ার জাহান,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম,বিনা বিজ্ঞানী মশিউর রহমান,মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমীরন সাধু। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন তুহিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ।
সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন,কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে লবন পানির চিংড়ি ঘেরের এক ফসলী জমিতে বিনা ধান,সূর্যমুখি,তরমুজ,তিল চাষের পাশাপাশি নেপাস জাতের আধুনিক বিনা-৯ সরিষা চাষ খুবই লাভ জনক। নভেম্বর মাসের শুরুতে ঘেরের পানি ফেলে দিয়ে বিনা চাষে সামান্য পরিমান সার দিয়ে কাঁদা মাটিতে বীনা-৯ সরিষার বীজ বপন করতে হয়। মাত্র ৮০ দিনের জীবনকালে বিঘা প্রতি সাড়ে ৬/৭ মন সরিষা উৎপাদন হতে পারে। এ বিষয়ে বীনা-৯ সরিষা চাষি কপিলমুনি’র মালথ গ্রামের মোঃ হারুন,গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, ইউটিউব এ সরিষার ক্ষেত দেখে আমার আগ্রহ হয়। তাই নভেম্ভর মাসের মাঝামাঝিতে চিংড়ি ঘেরের পানি সরিয়ে ফেলে ৭০বিঘা জমিতে বীনা-৯ জাতের সরিষার চাষ করি। তিনি আরোও জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এখন সরিষার ক্ষেত দেখে পরান জুড়িয়ে যায়। করোনাকালে দেশে খাদ্য সংকট মোকাবেলার তথ্য দিয়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, প্রতি বছর বিদেশ থেকে তৈল আমদানিতে সরকারের খরচ হয় ২৫/২৬ হাজার কোটি টাকা। এখন ১০ হাজার কোটিতে নামানোর পরিকল্পনা নিয়ে সরকার তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনের প্রতি জোর দিয়েছেন। খাদ্যসহ তেল জাতিয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সরকার দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ৫ লক্ষ কৃষকের প্রনোদনা দিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কৃষি বিভাগ ৬/৮ ডিএস পারমিটার মাটির লবনাক্ততা চিহ্ণিত করে পোল্ডার ভিত্তিক ঝুঁকিমুক্ত কৃষির পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন।