প্রতিদিনের ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশের যারা নির্বাচনে বিরোধিতা করেছে। নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য নানা ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে।প্রত্যাশা করেছে নানা ধরনের যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে থেকে নিষেধাজ্ঞা দেবে। মাস পেরিয়ে গেছে বরং বাইডেন শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করার জন্য চিঠি দিয়ে অভিব্যক্তি জানিয়েছেন। এখন বিএনপির কাছে প্রশ্ন এখন আপনাদের কে ক্ষমতায় বসাবে। কে আপনাদের ক্ষমতা পরিবর্তনে সহায়তা করবে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, বিএনপি এখন কোন আশায় বসে থাকবে, দেশের জনগণও নেই বিদেশিরাও চলে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসা ছিল সেই ভরসাও শেষ হয়ে গেলো।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আবারও রাজনীতি করতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া কোন পর্যায়ে রাজনীতি করবেন কি না বা উনি কি রাজনীতি করবেন এটা বিএনপির নেতাদের প্রশ্ন করাটাই ভালো, এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
সংসদে বিএনপিকে ব্যান করার দাবি উঠেছে, এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, দেখুন আমি একটা কথা বলি, সংসদে সবাই কথা বলতে পারেন। সদস্যদের নানা মতামত (অপিনিয়ন) থাকতে পারে। কিন্তু মতামতটাই সিদ্ধান্ত এমনটা মনে করার এখনও কোন কারণ নেই। এধরনের কোনো সিদ্ধান্ত দলীয়ভাবেও আমরা চিন্তা করিনি।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিনজন আহত হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যা ঘটছে তা তো আমরা জানি। এটা আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিষয়। তিনি একটা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সেটাই আমাদের দলের প্রতিক্রিয়া। এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের আশেপাশের দুই/তিনটা গ্রামের জনগণ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমাদের জন্য এটা উদ্বেগের। গোলা, মর্টারের শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডেও পড়ছে। তিন জন আমাদের আহত হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব ব্যাপারে নিশ্চয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
তিনি বলেন, আগস্টের ২৫ তারিখে যখন মিয়ানমারের জনগণ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে, আমাদের এয়ারস্পেস অনেক সময় লঙ্ঘিত হয়েছে তারপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা ছিল, তারা যতই প্রভোকেট করুক আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবো না। আমরা যুদ্ধের পক্ষে নয়। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। এখানে ব্যাপারটা হলো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। এটা তাদের নিজেদের বিষয়। আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ। এটা তাদের ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট। আমরা আহ্বান করবো, পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য আতঙ্কের কারণ হয় এমন কনফ্লিক্টের সমাধান তাদের নিজেদেরই করা উচিত। এব্যাপারে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটা সমাধান হতে পারে।
কাদের বলেন, চীনের মান্যবর রাষ্ট্রদূত গতকাল দেখা করতে এসেছিলেন, তাকেও এব্যাপারে বলেছি আপনাদের কথা তারা শুনে বলে সারা বিশ্ব জানে। কাজেই আপনারা তাদেরকে যুদ্ধ থেকে, ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট থেকে দূরে থাকার জন্য এবং তাদের বিরোধ বাংলাদেশে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করুক এই বিষয়টা আপনাদের একটু দেখা উচিত। যেহেতু আপনারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার সে হিসেবে আপনাদের সহযোগিতার আহ্বান আমরা জানাচ্ছি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারও যদি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চায় সে ক্ষেত্রে আপনাদের পলিসিটা কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বলেছেন যে উদারতা দেখানোর ব্যাপারটা আমরা এফোর্ট করতে পারবো না। এমনিতেই একটা বোঝা, তারপর আরেক বোঝা এটা আর সম্ভব নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণকাণ্ডের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের বিভিন্ন ভ্রাতিপ্রতিম, সহযোগী সংগঠন আছে। এই দলের ভেতরে শতভাগ ভাললো মামুষ এই দাবি আমরা করতে পারি না। এর মধ্যে খারাপ কাজও কিছু লোক করে। খারাপের কাজের জন্য আমাদের একটা বৈশিষ্ট্য হলো এই, আমরা খারাপ কাজ টা প্রশ্রয় দেই না। আইনের আওতায় আসার মত যে অপরাধ তা আইনের আওতায় এনেই করা উচিত। এই পর্যন্ত অনেক দৃষ্টান্ত আছে, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর যারা খারাপ কাজ করেছে, যারা অপরধ করেছে তারা কেউই পার পেয়ে যায়নি।
তিনি বলেন, আবরার হত্যার বিচার হয়েছে, বিশ্বজিত হত্যায়ও কাউকে বিচারহীনতা অবস্থায়… ইম্পিউনিটি যে কালচার সেটা আমরা গড়তে দেয়নি। এটা সবার জানা আছে। এখন কথা হলো একটা দলে ভালোর সঙ্গে খারাপ লোকও থাকতে পারে। খারাপ কাজও করতে পারে কিন্তু দল সেটাকে কীভাবে নিচ্ছে। দল কি সে অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? দল কি সে অপরাধের ব্যাপারে উদাসীন? আমরা তা নই। আবারও আমি সেটা দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করতে চাই।