২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

বাণিজ্যমেলায় খাবারপ্রেমীদের পছন্দের শীর্ষে প্রাণের খাদ্যপণ্য

প্রতিদিনের ডেস্ক
চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৮তম আসর। অন্যান্যবারের মতো এবারও খাদ্যপণ্যের বিশাল সমাহার নিয়ে বাণিজ্যমেলায় প্যাভিলিয়ন-স্টল সাজিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ‘প্রাণ’। বিশেষ করে ফাস্টফুড ও তৈরিকৃত খাবার নিয়ে হাজির হওয়া টেস্টি ট্রিট, মিঠাই ও ঝঁটপট মেলায় আগত খাবারপ্রেমীদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে। এছাড়া বিস্ক ক্লাব, কফি হাউজ এবং মি. নুডুলসের প্যাভিলিয়নেও খাবারপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রাণের খাবারের বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়ন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বাণিজ্যমেলায় সবসময় খাবারের মান ও দাম নিয়ে ভোজনরসিকদের নানা অভিযোগ থাকে। তবে এদিক দিয়ে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম প্রাণের খাবারের প্যাভিলিয়ন-স্টলগুলো। এই প্যাভিলিয়নগুলোতে সুলভমূল্যে ভালোমানের খাবার পেয়ে সন্তুষ্ট খাবারপ্রেমীরা। এর ফলে মেলায় প্রবেশ করেই ভোজনরসিকদের বড় একটি অংশই ভিড় করছেন প্রাণের খাবার স্টল-প্যাভিলিয়নে। অন্যদিকে সুলভমূল্যে খাবার বিক্রি করার পাশাপাশি মেলা উপলক্ষে খাবারে বিভিন্ন ছাড়ও দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার ইস্কাটন থেকে মেলায় আসা তামান্না আক্তার বলেন, দ্বিতীয়বার আমার এখানে আসা। ঝঁটপটের খাবার অনেক ভালো লাগছে। আগেরবার শুধু স্বামীকে নিয়ে এসেছিলাম। এবার মেয়েকেও নিয়ে এসেছি। মেলায় এলেই সবসময় ঝঁটপট কিংবা টেস্টি ট্রিটে আসা হয়। আগেরবার খাবার অনেক ভালো লেগেছিল, তাই আবারও এসেছি। আর খাবারের দামও আমার কাছে কম মনে হয়েছে।
টেস্টি ট্রিটে খাবার খেতে আসা স্বপন খান বলেন, ফ্রাইড রাইস খেয়েছি। টেস্টি ট্রিটের সব খাবারই খুব সুস্বাদু। অন্যসব দোকানে খাবারের অনেক দাম, পাশাপাশি খাবারের কোয়ালিটি তেমন ভালো না।
টেস্টি ট্রিটে খাবার খেতে আসা আরিফুল ইসলাম নামের আরেক খাবারপ্রেমী জানান, এখানে এসে চিকেন শর্মা খাচ্ছি। এটি আমার খুব প্রিয় একটি খাবার। আমার কাছে মনে হয় মেলায় যেসব ফুড স্টল আছে, এর মধ্যে টেস্টি ট্রিট বেস্ট। কারণ দামে সাশ্রয়ী এবং খাবারও খুব মানসম্মত। এসব স্টলে খাবারের মান সবসময় ভালো থাকে। সেজন্য সবাই টেস্টি ট্রিটের খাবার পছন্দ করেন।
মিরপুর-১১ থেকে মেলায় এসেছেন কিরন আক্তার। বিস্ক ক্লাবে কেনাকাটা শেষে কথা হয় জাগো নিউজের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাণিজ্যমেলায় এসে এই প্যাভিলিয়ন থেকে কিছু কুকিজ পণ্য কেনা হয়েছে। কোয়ালাটি অনুযায়ী দাম আমার কাছে পারফেক্টই মনে হলো। প্রাণের সব পোডাক্টই আমার খুব ভালো লাগে। প্রাণের সবকিছুই বেস্ট।
টেস্টি ট্রিটের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. শরীফ হোসেন বলেন, মেলা উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন নতুন আইটেম নিয়ে আসছি। এছাড়া লাঞ্চের জন্য রয়েছে ফ্রাইড রাইস ও ডিম-খিচুড়ি। মাত্র ৮০ টাকায় আমরা এই ডিম-খিচুড়ি দিচ্ছি। যেন প্রত্যেক ক্রেতা-দর্শনার্থী এখানে এসে লাঞ্চ করতে পারেন। আমরাই শুধুমাত্র সাশ্রয়ী রেটে এসব খাবার বিক্রি করছি। আমরা ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমাদের এই মুহূর্তে তিনটি কম্বো অফার চলছে।
টেস্টি ট্রিটের অপারেশনের দায়িত্বে থাকা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের চিকেন ফ্রাই, চিকেন বার্গার, রাইস কম্বো পাওয়া যাচ্ছে। খাবারপ্রেমীরা এখানে ৪৩৯ টাকার রেগুলার প্যাকেজের খাবার ২৯৫ টাকায় নিতে পারছেন। এতে ১ পিস চিকেন, ৪ পিস উইংস ও একটি ম্যাক্সকোলা থাকবে। এছাড়া আমরা ৬০ টাকায় কোরিয়ান চিকেন বিক্রি করছি। ৪ পিস কোরিয়ান চিকেন কিনলে ২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
বিস্ক ক্লাবের ইনচার্জ মো. ইয়াসিন বলেন, আমরা ৩১০ টাকার কুকিস কম্বো মাত্র ২৪৯ টাকায়, ৩০৫ টাকার মামা ওয়েফার কম্বো ২৪৯ টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়া মেলা উপলক্ষে আমাদের প্যাভিলিয়নে আরও নতুন কয়েকটি আইটেম যুক্ত হয়েছে। এসব খাবারের দাম বিকাশে পেমেন্ট করলে ৫০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক করা হচ্ছে।
প্রাণ ফোজেন ফুডসের ডিজিএম ও ঝঁটপটের ইনচার্জ আব্দুস সামাদ বলেন, এখানে আমরা ফ্রোজেন আইটেম বেশি বিক্রি করছি। এছাড়া মেলা উপলক্ষে আমরা সুলভমূল্যে ফ্রাইড রাইস বিক্রি করছি। তাছাড়া সমুচা রোল, চিকেন মিট বল, নাগেটসহ বিভিন্ন স্ন্যাক্স আইটেমেও ভালো সাড়া পাচ্ছি। ক্রেতাদের তাৎক্ষণিকভাবে আমরা গরম গরম খাবার সরবরাহ করতে পেরে ভীষণ খুশি। আমাদের প্যাভিলিয়নে চিকেন আইটেমগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। কিছু ক্রেতা আমাদের খাবারে মুগ্ধ হয়ে ৭-৮ হাজার টাকার ফ্রোজেন ফুডসও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা মেলায় সবসময় বেশি লাভের চেয়ে নিজেদের ব্র্যান্ডিং করার দিকে বেশি লক্ষ রাখি।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলা। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মেলা হতো শেরেবাংলা নগরে। কোভিড মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এরপর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলার আয়োজন করা হয় পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে। এবার তৃতীয়বারের মতো স্থায়ী ভেন্যু বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চীনের অর্থায়নে পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি বছর এখানেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আসর বসবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়