প্রতিদিনের ডেস্ক
কনসার্ট না করে এক লাখ ৭২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে করা মামলায় গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নোবেলের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মতিঝিল থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আদালতের সূত্রমতে, গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরির আদালতে নোবলকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের লালবাগ জোনাল টিমের ইন্সপেক্টর হুমায়ুন কবির। আদালত অভিযোগপত্রটি ‘দেখিলাম’ বলে স্বাক্ষর করে বিচারের জন্য বদলির আদেশ দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামি নোবেল বাদীর কাছ থেকে চুক্তির এক লাখ ৭২ হাজার টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে নিয়ে উত্তোলন করেন। কিন্তু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে না গিয়ে ওই টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেন। তদন্তকালে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণে এজাহারনামীয় আসামি নোবেলের বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগটি দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০ ধারার অপরাধ হিসেবে প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
জানা যায়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাইতে না গিয়ে এক লাখ ৭২ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগে গত ১৬ মে রাজধানীর মতিঝিল থানায় শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬ এর প্রতিনিধি মো. সাফায়েত ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের ১৬ মে নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর ২০ মে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ওইদিনই তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করে ডিবি। অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে ওই বছরের ২২ মে বাদীকে কনসার্টে গান গাওয়ার জন্য নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত। এরপর নিজের ভুলের জন্য সবার কাছে ক্ষমা চান গায়ক নোবেল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ এপ্রিল শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ‘এসএসসি ব্যাচ ২০১৬’-এর প্রথম পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য ওই বছরের ২৫ মার্চ নোবেলের সঙ্গে মোট এক লাখ ৭৫ হাজার টাকার মৌখিক চুক্তি করেন বাদী। নোবেলকে তখন অগ্রিম হিসেবে নগদ ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এসময় নোবেল অনুষ্ঠানের আগেই অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে জানান এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, পরে এসএসসি ব্যাচের সদস্যদের থেকে টাকা সংগ্রহ করে একই বছরের ৩০ মার্চ সিটি ব্যাংক এটিএম বুথ শরীয়তপুর ব্রাঞ্চ থেকে ৪৭ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এর দুই সপ্তাহ পর ১৪ এপ্রিল একই ব্রাঞ্চ থেকে আরও এক লাখ ১০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। পুনর্মিলনীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য তিন দফায় মোট এক লাখ ৭২ হাজার টাকা দেওয়া হয় নোবেলকে। কিন্তু টাকা নিয়েও অনুষ্ঠানে না গিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তা আত্মসাৎ করেন তিনি।