১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

যে হাসপাতালে ১৮টি ডায়ালাইসিস মেশিনের ১৩টিই বিকল

আব্দুল আলিম,সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালাইসিস বিভাগে কিডনি রোগী ভর্তির পর বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বজনদের। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও এখানে বাইরে থেকে রোগীর স্বজনরা ওষুধ কিনে আনার পর সেটা দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন সেবিকারা। এ হাসপাতালের অধিকাংশ ডায়ালাইসিস মেশিনই নষ্ট। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম ২০১৫ সালের ৪ এপ্রিল চালু হয়। এরপর আস্তে আস্তে সিটি স্ক্যানসহ আধুনিক প্যাথলজি বিভাগও চালু করা হয়। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে চালু করা হলো ডায়ালাইসিস বিভাগ।দীর্ঘ ৭ বছরের বেশি সময় ধরে এ হাসপাতালে কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস সুবিধা চালু থাকলেও নেই কোন ওষুধ ও চিকিৎসক। ১৮টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে চালু রয়েছে মাত্র ৫টি। বাকি ১৩টি পড়ে রয়েছে বিকল অবস্থায়। বাইরে থেকে রোগীর স্বজনরা ওষুধ কিনে আনার পর রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা থাকলেও সেবিকারা দিচ্ছেন মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এতে নতুন করে শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কিডনি রোগীরা। ফলে আর্থিক সংকটে থাকা এসব রোগীদের চিকিৎসা নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একাধিক রোগীর স্বজনরা বলেন, আমরা জানি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়। তবে এখানে এসে কি চিকিৎসা পাচ্ছি? বাইরে থেকে ওষুধপত্র কিনে এনে দিলে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। একটা সিরিঞ্জও নেই এখানে। বাইরে থেকে সিরিঞ্জ কিনে দিলে নার্সরা সেটা ব্যবহার করছেন। স্বজনরা আরও বলেন, ১৮ টি মধ্যে ১৩ টা ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট। এজন্য রোগীদের অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া নতুন রোগীদের ক্ষেত্রে ভোগান্তি বেড়ে যায়। এখানে কিডনি রোগীদের ক্যান নেই, পার্শ্ববর্তী ফার্মেসিতে টাকা জমা দিলে সেখান থেকে ক্যান সরবরাহ করছে। তারপর সেটা দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন নার্সরা। এসব বিষয়য়ি কথা বলতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও সেবিকারা ডায়ালাইসিস ইউনিটের নানাবিধ সংকটের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন বেলাল জানান, বাইরে থেকে রোগীর স্বজনরা ওষুধ কিনে আনার পর রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা থাকলেও সেবিকারা দিচ্ছেন মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। হাসপাতালের পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরী জানান, তবে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের বেহাল দশা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ হাসপাতালটি পরিচালক। তিনি আরও জানান, বাজেট পেলে ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে বিকল হওয়া মেশিনগুলো মেরামত করা হবে। তবে সেক্ষেত্রে সময় লাগবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়