২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

ভাষার মাস একুশ

সোনিয়া আফরিন
মায়ের ভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালির মহান আত্মত্যাগের স্মৃতি বিজড়িত মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয়, বিশ্ব ইতিহাসেরও এক গৌরবময় দিন। অমর একুশে তাই বাঙালির জাগরণের ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামী ঐতিহ্যের পথরেখায় এক অনির্বাণ প্রেরণার নাম। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮) রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পাকিস্তানি পুলিশের গুলিবর্ষণে শহীদ হন রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত সহ অনেকেই।২০১০ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। একুশের ভাষা আন্দোলনের চেতনায় বাঙালি অর্জন করে সাংস্কৃতিক অধিকার। একুশের ধারাক্রমে অর্জিত হয় আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারসমূহ এবং বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয় সম্পন্ন হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পথে স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাধ্যমে। মহান ভাষা আন্দোলনে জারিত একুশের চেতনা বাঙালির প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শক্তি যুগিয়েছে। লড়াই, সংগ্রাম, আন্দোলন ও প্রতিবাদ-প্রতিরোধে একুশের প্রেরণায় বাঙালি বার বার বিজয়ী হয়েছে। একুশ বাঙালিকে দিয়েছে মাথা নত না করার শিক্ষা। বাঙালির জাতীয় ইতিহাস ও রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় একুশে হলো এক আলোকস্তম্ভ। চেতনার চিরজাগ্রত বাতিঘর। এক বছর পরেই ভাষা আন্দোলন স্পর্শ করবে ৭২ বছরের ঐতিহাসিক মাইলফলক। একই সাথে উন্নয়ন, অগ্রযাত্রায় বাঙালি পালন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। বাঙ্গালি জাতি পুরো মাস জুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষা শহীদদের প্রতি। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। ২০২৪ সালের এই সঙ্কুল ফেব্রুয়ারিতে একুশের চেতনাদীপ্ত বাঙালি জাতি আবারো ঐক্যবদ্ধ শপথে উজ্জীবিত হবে রোগ, জরা, মারী, দারিদ্র্য, অপুষ্টি, অশিক্ষা, অন্যায় ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে। বীর বাঙালি সম্মিলিত কণ্ঠে উচ্চারণ করবে বিজয়ের সঙ্গীত। প্রতিটি বাঙ্গালি হৃদয়ে ধ্বনিত হবে সেই অমর সংগীতের অমিয় বাণী ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়