প্রতিদিনের ডেস্ক:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টক সমালোচক ও দেশটির কারাবন্দি বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার সালেখার্ড শহরের মর্গে গিয়েছিলেন নাভালনির মা এবং আইনজীবী। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর মর্গটি বন্ধ পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফোন করলে জানা যায়, মরদেহ মর্গে নেই। এ ঘটনার পর নাভালনির সমর্থকরা মরদেহটি অবিলম্বে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ জানান, আর্কটিক কারাগারে মৃত্যুর একদিন পরেও ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারেননি মা লিউডমিলা নাভালনায়া।কিরা ইরারমিশ বলেন, আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি এটা কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। তারা এখন হত্যার প্রমাণ লোপাট করতে চাইছে। যে কারণে তারা পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করছে না। তারা নাভালনির মরদেহ লুকিয়ে রাখছে। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, নাভালনির আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে এবং এ ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলেই মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি। গত এক দশকে রাশিয়ায় বিরোধী নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সবশেষ তাকে ২০২১ সালে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকে কারাগারেই ছিলেন। গত বছরের শেষ দিকে তাকে উত্তর সাইবেরিয়ার ইয়ামালো-নেনেটস অঞ্চলের কারা কলোনিতে নেয়া হয়। এই কারাগারকে রাশিয়ার সবচেয়ে কঠোর জেলগুলোর একটি বলেই গণ্য করা হয়। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর খবর ঘোষণা করে রুশ সরকার। এক বিবৃতিতে ইয়ামালো-নেনেটস জেলার কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সকালে হাঁটার পরে হঠাৎ নাভালনি অসুস্থ বোধ করেন। অসুস্থ বোধ করার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এমন অবস্থায় তাৎক্ষণিক জরুরি মেডিকেল টিমকে ডাকা হয়। তারা এসে চেষ্টা করলেও নাভালনিকে বাঁচাতে পারেননি।তবে নাভালনির দলের অভিযোগ, তাদের নেতাকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে হত্যা করা হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোও ৪৭ বছর বয়সী রুশ নেতার আকস্মিক মৃত্যুর জন্য রুশ সরকারকে দায়ী করেছে। প্রকৃত ঘটনা ‘জরুরিভিত্তিতে স্পষ্ট’ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।নাভালনির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পশ্চিমাদের মূল্যায়ন ‘পক্ষপাতমূলক এবং অবাস্তব’ বলে মন্তব্য করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।