প্রতিদিনের ডেস্ক:
ফের ভারত এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে দুটি পৃথক ঘটনায় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২২টি সোনার বিস্কুট, ৩টি সোনার গলানো পেস্ট উদ্ধার করা হয়েছে। মোট ৩ কেজি ৬২৮ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ২৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৮ রুপি বা ২ কোটি ৯৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ টাকা। সোনা পাচারের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, পেট্রাপোল স্থলবন্দরে ১৪৫ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য রাত ১২টার দিকে পেট্রাপোল আইসিপি প্রধান গেটে ভারতের দিক থেকে আসা দুটি খালি ট্রাক থামায়। সে সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা সন্দেহজনক ট্রাকটি তল্লাশির জন্য নিরাপত্তা চৌকিতে নিয়ে আসে। সেখানে পুঙ্খানুপুঙ্খ তল্লাশি চলাকালে তারা দেখতে পায় ড্রাইভারের কেবিনের ভেতর ২২ টি সোনার বার লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এরপর চালকের কাছ থেকে সোনাসহ ট্রাকটি বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ সদস্যরা। সঙ্গে সঙ্গেই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় গ্ৰেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন রাজু দাস (২৭) এবং সঞ্জীব দাস (২২)। রাজু দাস পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর দত্ত পাড়া শ্রমিক পল্লীর বাসিন্দা। এছাড়া সঞ্জীব দাস পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দমদম পাইকপাড়ার বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুজনই জানিয়েছেন যে, তারা ভারতীয় নাগরিক, পেশায় ট্রাক চালক। প্রায় দুই বছর ধরে ট্রাক চালাচ্ছেন তারা। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আইসিপি পেট্রাপোলের কার্গোগ্রেট দিয়ে প্রায় ৩১০ প্যাকেট কাপড় ও কাপড়ের রপ্তানি পণ্য লোড করে ট্রাক নিয়ে বেনাপোলের স্থলবন্দরে যান। কিন্তু আনলোড করতে দেরি হওয়ায় তিনি ট্রাকটি আনলোড এরিয়ায় দাঁড় করিয়ে রাখেন। এরপর বাংলাদেশের সেয়াজ ও উজ্জ্বল নামে দুই ব্যক্তি তাকে স্বর্ণ দিয়ে বলেন, এই স্বর্ণ ভারতে পাঠালে তাকে দশ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সেয়াজ ও উজ্জ্বলের কাছ থেকে সোনার বিস্কুট সংগ্রহ করে ট্রাকের কেবিনে লুকিয়ে রাখেন তিনি। সেয়াজের নির্দেশে পেট্রাপোলে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে সোনার বিস্কুট পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। ট্রাকগুলো আইসিপি পেট্রাপোলের যানবাহন চেকিং এলাকায় পৌঁছালে বিএসএফ সদস্যরা উভয় ট্রাক থেকে সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেন। অপর আরেকটি ঘটনায় বিএসএফের সদস্যরা ইমিগ্রেশনের নিয়মিত অনুসন্ধানে এক ভারতীয় নাগরিককে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরিক্ষা করার সময় কিছু ধাতব পদার্থের উপস্থিতি সনাক্ত করেন। তল্লাশির পর তারা তিনটি সোনার পেস্ট উদ্ধার করেন। সঙ্গে সঙ্গেই ওই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেফতার করে বিএসএফ। অভিযুক্ত মোহাম্মদ রিবায়েদিন (২৭) ভারতের তামিলনাড়ুর থন্ডি রামনাথপুরম, ৪/৭ সি, মোহাম্মদ আবুবক্কর স্ট্রিটের বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে মোহাম্মদ রিবায়েদিন জানান, সে হোটেলে রান্নার কাজ করে। এছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরে অজ্ঞাত পরিচয় বাংলাদেশির কাছ থেকে সোনার চালান সংগ্রহ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।আইসিপি পেট্রাপোলের মাধ্যমে তিনি ভারতে আসেন। সোনার বারগুলো চেন্নাইয়ের ইকবালের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। সফলভাবে সেগুলো পৌঁছাতে পারলে তিনি ভারতীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার রুপি পাবেন। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করেন। এ বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও বিএসএফের ডিআইজি এ কে আর্য বলেন, চোরাচালান রুখতে সবসময় প্রস্তুত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।