১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তন অস্তিত্ব সংকটে উপকূল

উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর
বৈশ্বিক উষ্ণতা আজ বিশ্বব্যাপী বহুল আলোচিত বিষয়। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে গোটা বিশ্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে এই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে, যে কারণে সারা বিশ্ব চিন্তিত। বাংলাদেশ ও সেই সাথে উদ্বিগ্ন। যদিও বৈশ্বিক উষ্ণতায় বাংলাদেশের অবদান সর্বনিম্ন কিন্তু দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। উপকূলবাসীকে এই ঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ করতে দরকার নতুন ধরনের পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার আহ্বান জানিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সাতক্ষীরা শ্যামনগরস্থ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের আয়োজনে এবং ব্রেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড এর আর্থিক সহযোগিতায় বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল, অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল বিধুস্রবা মণ্ডল, সাংবাদিক ও শিক্ষক রণজিৎ কুমার বর্মন, শিক্ষক মানবেন্দ্র দেবনাথ, সুজাতা রাণী মিস্ত্রি, লিডার্সের কর্মীবৃন্দসহ আরও অনেকে। মানববন্ধনে বক্তারা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার দাবি তুলে ধরেন। লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রভাবে যদি এক মিটার সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ে তাহলে উপকূলের ১৫% স্থলভাগ হারাতে হবে এবং ৩ কোটি মানুষ উদ্বাস্তু/শরনার্থী হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের লবণপানি ইতিমধ্যে দেশের অভ্যন্তরে ১০০ কিলোমিটার প্রবেশ করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান পরিস্থিতি এরূপ বিদ্যমান থাকলে এর পরিধি আরও বাড়বে। তাই তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বর্তমান প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দ্রুত কমিয়ে আনা জরুরী প্রয়োজন। বিধুস্রবা মণ্ডল বলেন জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মেরু অঞ্চলের বরফগলন ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও লবনাক্ততা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রণজিৎ কুমার বর্মন বলেন যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ু পরিবর্তন খুব দ্রুত হচ্ছে। এই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দরিদ্র দেশগুলিতে অভিযোজন কার্যক্রম বাস্তবায়নে ধনী দেশগুলির সহায়তা জরুরী প্রয়োজন।মানবেন্দ্র দেবনাথ বলেন তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শারীরিক ভাবেও অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে হিটস্ট্রোক ও হাইপোথার্মিয়ার মত নানা অসুস্থতা দেখা দিতে পারে, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই আমাদের এখন ই তাপমাত্রা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে হবে এবং পৃথিবীকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য করে যেতে হবে। সাতক্ষীরা শ্যামনগরস্থ লিডারসের এডভোকেসি অফিসার তমালিকা মল্লিক কর্তৃক পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য নিশ্চিত করা হয় ।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়