নিপা সরকার
আবহাওয়া পরিবর্তনসহ নানা কারণে দিনভর আবহাওয়া গরম থাকলেও মাঝরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডা আবহাওয়া। আবার মাঝে মাঝে বৃষ্টিরও দেখা মিলছে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পেরে বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন নবজাতক, শিশু ও বৃদ্ধরা। হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগী। ঠান্ডা, জ্বর, ডায়রিয়া রোগীদের নিয়ে মেঝেতে থাকার জন্য বিপাকে পড়ছেন রোগী সহ রোগীর স্বজনরা। এমন অবস্থায় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে অভিভাবকরা ভিড় করছেন শিশু ও বয়স্ক রোগীদের নিয়ে। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে সর্দিজ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অধিকাংশ রোগী। বিশেষ করে কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন। শুক্রবার ছুটির দিন থাকাতে নিউমোনিয়া ওয়ার্ডে নার্স তেমন দেখা যায়নি যার ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে রোগী ও রোগী স্বজন। শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ডায়রিয়া নিউমোনিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১২৬ জনন। যার মধ্যে হাসপাতালে ডায়রিয়াতে ১৩ জন এবং নিউমোনিয়াতে ১১৩ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। যার মাঝে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মহিলা রোগী পাঁচজন, পুরুষ রোগী একজন, এবং সাত জন শিশু ভর্তি রয়েছেন। নিউমোনিয়া ওয়ার্ডে পুরুষ শিশু ৪৯ জন, মেয়ে শিশু ৪৪ জন ভর্তি রয়েছে। একই ভাবে নিওনেটাল ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে পুরুষ শিশু ১৩ এবং মেয়ে শিশু ৭ জন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গত সাত দিনে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮০ জন রোগী।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স প্রতিদিনের কথাকে বলেন, ১৩ জন রোগী ভর্তি আছে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি সুস্থ করে তোলার জন্য। রোগীদের মূলত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এসব সমস্যা হচ্ছে। এখন দিনের বেলাতে গরম পড়ছে আবার রাতেও শীত পড়ছে যে কারণে এই সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।’ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বয়স্ক রোগী সুখজান খাতুনের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন প্রতিদিনের কথাকে বলেন, ‘বুধবার থেকে ডায়রিয়া জ্বর, বমি, খিচুনির কারণে হাসপাতালে ভর্তি করেছি আম্মুকে। এখনো পুরোপুরি সুস্থ নয়।’ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু অভি হাসানের মা রমা খাতুন প্রতিদিনের কথাকে বলেন, ‘গত পাঁচ দিন ধরেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। মঙ্গলবার হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছি। এখনও কিছু খেতে পারছে না। তবে এখন একটু সুস্থ আছে।’ শিশু রোগী মরিয়মের মা আমেনা বেগম প্রতিদিনের কথাকে বলেন, ‘প্রায় পনেরো দিন মত অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি করেছি পাঁচ দিন আগে। ঠান্ডা, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। ডাক্তার বলেছেন, বুকে জল জমেছে।’ আরেক শিশু রোগী আলিফের নানী রহিমা খাতুন প্রতিদিনের কথাকে বলেন, ‘বুধবার হাসপাতালে এসেছি। জ্বর, ঠান্ডা, হাঁফানি হয়েছিল। হঠাৎ করেই এমন ঠান্ডা জ্বর। তবে এখন সুস্থ আছে।’ এসব বিষয় নিয়ে কথা হয় যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার পার্থ প্রতিম চক্রবর্তীর সাথে। তিনি প্রতিদিনের কথাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুরা এবং বৃদ্ধরা একটু বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময়টাতে আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।