৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

বেড়েছে জ্বর-ঠান্ডার প্রকোপ, বেশি ঝুঁকিতে শিশু-বয়স্করা

প্রতিদিনের ডেস্ক:
একই পরিবারের ১১ বছরের শিশু তাহিরা ও পাঁচ বছরের শিশু রুশাইদা। দুজনেরই তিনদিন ধরে জ্বর, সঙ্গে সর্দিও লেগে আছে। সাধারণ প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিল তাদের। এক পর্যায়ে সর্দি থেকে কানে সমস্যা দেখা দেয় তাহিরার। এরপর তাকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তাহিরের মা কামরুন নাহার জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাধারণ সর্দি-জ্বর মনে করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ওর কানে ব্যথা শুরু হয়। ডাক্তারের কাছে নিয়ে এসেছি। বলছেন, কানের পর্দায় সমস্যা হয়েছে। ড্রপ দিয়েছেন। এখন দেখি…।’ শুধু এ পরিবারটিতেই নয়, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। একই ঘরে আক্রান্ত হচ্ছেন একাধিক সদস্য। চিকিৎসকরা বলছেন, দিন ও রাতের তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে এখন ভাইরাসজনিত জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। এই জ্বর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনে ছড়াচ্ছে। সাধারণত তিন থেকে সাতদিন জ্বর, সর্দি ও কাশির তীব্রতা থাকছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। দিন ও রাতের তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে এখন ভাইরাসজনিত জ্বর হচ্ছে। এই জ্বর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনে ছড়াচ্ছে। তিনদিনের বেশি জ্বর থাকলে অবহেলা করা উচিত নয়। পরীক্ষা করানো উচিত। যেহেতু এখন আবার নতুন করে করোনা হাতছানি দিচ্ছে। এছাড়া ডেঙ্গুও পুরোপুরি যায়নি। বিশেষত, শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি ও ক্রনিক রোগীদের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত চিকিৎসকদের পরামর্শ, অসুস্থ হওয়ার অন্যতম উপসর্গ জ্বর। সাধারণ জ্বর হলে দু-তিনদিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু জ্বর তিনদিনের বেশি থাকলে চিকিৎসাসেবা নেওয়াটা জরুরি। সরেজমিনে রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, এই হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে রোগীদের ভিড়। সবচেয়ে বেশি ভিড় মেডিসিন বিভাগে। হাসপাতালগুলোর তথ্যে জানা যায়, অন্য সাধারণ সময়ের তুলনায় রোগী বেড়েছে ২৫ শতাংশ। তাদের বেশিরভাগই জ্বর-ঠান্ডাজনিত রোগী।ফার্মেসিতে বেড়েছে জ্বর-সর্দির ওষুধ বিক্রি রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একাধিক ফার্মেসিতে (ওষুধের দোকান) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে মোনাস, ফেক্সো বা এজাতীয় অন্য ওষুধ। তবে ঠান্ডা একটু কমে যাওয়ার পর থেকে প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ নাপা, এইস ও সর্দির ওষুধ বিক্রি অনেক বেড়েছে। বাড্ডার লাজ ফার্মার একজন বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, শীতকালীন সময়ের তুলনায় এখন জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগের ওষুধ বিক্রি বেড়েছে। সাধারণত শীতকালে রোগের প্রকোপ একটু কম থাকে। শীত কমার সঙ্গে সঙ্গে জ্বর-সর্দির মতো অসুখ বেড়ে যায়।তিনি বলেন, বেশিরভাগ শিশুর শুরুতেই তীব্র জ্বর আসছে। ১০৪-১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠছে। সাধারণ জ্বর তিনদিন পর এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু সর্দি-কাশি বা অন্য উপসর্গ থাকছে অনেকের, তাই জ্বর দ্রুত কমছে না। হাসপাতালে এখন এ ধরনের রোগীর সংখ্যাই বেশি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের তথ্যে জানা যায়, বছরের অন্য সময় প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী আসেন। এখন তা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগীই জ্বর, ঠান্ডা ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। দুই শতাংশ ক্ষেত্রে করোনা আক্রান্ত রোগীও আসছেন। বেশিরভাগ শিশুর শুরুতেই তীব্র জ্বর আসছে। ১০৪-১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠছে। সাধারণ জ্বর তিনদিন পর এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু সর্দি-কাশি বা অন্য উপসর্গ থাকছে অনেকের, তাই জ্বর দ্রুত কমছে না। হাসপাতালে এখন এ ধরনের রোগীর সংখ্যাই বেশি। জ্বর তিনদিনের বেশি থাকলে চিকিৎসাসেবা নেওয়াটা জরুরি তিনি বলেন, দিন ও রাতের তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে এখন ভাইরাসজনিত জ্বর হচ্ছে। এই জ্বর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনে ছড়াচ্ছে। তিনদিনের বেশি জ্বর থাকলে অবহেলা করা উচিত নয়। পরীক্ষা করানো উচিত। যেহেতু এখন আবার নতুন করে করোনা হাতছানি দিচ্ছে। এছাড়া ডেঙ্গুও পুরোপুরি যায়নি। বিশেষত, শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি ও ক্রনিক রোগীদের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত।তিনি বলেন, জ্বরের সঙ্গে ঘাড় বা শরীরে ব্যথা, উচ্চ তাপমাত্রা, বমি করা বা খাবার খেতে না পারা, তিনদিনের বেশি জ্বর থাকা, শুধু রাতে জ্বর আসা, শরীরে র‌্যাশ বের হওয়া, চোখ শুকিয়ে যাওয়া ও খিঁচুনি হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়