প্রতিদিনের ডেস্ক:
২০২২ সালের ১৮ মে থেকে নিখোঁজ রয়েছে অভিজিত মাঝি নামের দশম শ্রেণির এক ছাত্র। ৬৪৯ দিনেও খোঁজ না পেয়ে ছেলেকে ফেরত পেতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছেন অভিজিতের বাবা অপু মাঝি। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে বসে এ আবেদন জানান তিনি। অভিজিতের বাবা অপু মাঝি জানান, ২০২২ সালের ১৮ মে সকাল ৭টার দিকে অভিজিত তার স্কুলের শিক্ষক আলমগীর মাস্টারের সঙ্গে ভ্যানে চড়ে স্কুলে যায়। তারপর থেকে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। অপু মাঝি জানান, তার বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার পুটিয়াকান্দিতে। অভিজিত নড়িয়া থানাধীন মহিষখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে পড়াশোনায় মেধাবী, রোল নম্বর ছিল ১। অভিজিতের বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে ওই স্কুলের আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক আলমগীর মাস্টারের কাছে প্রাইভেট পড়তো। আলমগীর মাস্টার অজ্ঞাত কারণে আমার ছেলেকে আরবি বই দিয়ে আরবি অক্ষর ও ভাষা শেখালে প্রথমে আমাদের সন্দেহ হয়। তারপর হঠাৎ সে আমার ছেলেকে ড. আয়েয আল কারনি লিখিত ‘হতাশ হবেন না’ নামে অস্ত্র সজ্জিত যুবকের ছবি ছাপানো বই দেয়। এ ধরনের বই পড়তে দেওয়ায় বিষয়টিতে জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতা আছে বলে আমি মনে করি। কারণ, আলমগীর মাস্টার আইসিটি-বিষয়ক শিক্ষক, সে আরবি শিক্ষক নয়, এমনকি আমার ছেলে তার কাছে আরবি শিক্ষার জন্য প্রাইভেটও পড়তো না ।’অপু মাঝি বলেন, ‘আমার ছেলের নিখোঁজ হওয়ার ২/৩ দিন পর আমি নড়িয়া থানায় ওসির সামনে বসে থাকা অবস্থায় একটি অপরিচিত নম্বর (০৯৬৩৮৭১৭০৭১) থেকে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে ফোন আসে। যা থানার ওসি সাহেব অবগত আছেন। ছেলেকে না পেয়ে থানায় জিডি করেছি। থানা আমাদের মামলা গ্রহণ না করায় শরীয়তপুর কোর্টে মামলা করি। কিন্তু আজও ছেলেকে ফেরত পাইনি।’তিনি অভিযোগ করেন, ‘আলমগীর মাস্টারের আরবি হাতের লেখা শরীয়তপুর কোর্টে জমা দেওয়া আছে এবং ‘হতাশ হবেন না’ নামের জঙ্গি বইটি নড়িয়া থানায় জমা দেওয়া আছে। আমরা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ করেছি। আমরা মনে করি, আলমগীর মাস্টার আমার ছেলেকে পাচার করে দিয়েছে, অথবা কোনও জঙ্গি গ্রুপে পাঠিয়ে দিয়েছে।’অভিজিতের বাবা জানান, এমতাবস্থায় আলমগীর মাস্টারের হাত থেকে আমার ছেলেকে ফেরত পেতে সহায়তা করার জন্য আপনার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) কাছে একান্তভাবে অনুরোধ করিতেছি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— নিখোঁজ অভিজিত মাঝির মা সবিতা মাঝি, ছোট বোন অজান্তা মাঝি, দাদা সুভাষ মাঝি, ফুপু সুমা রানী, মামা রবীন্দ্র মণ্ডল ।