প্রতিদিনের ডেস্ক:
ধর্ষণ মামলায় বিচারিক আদালতে খালাস দেওয়া আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বাদীর আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ড. শরীফুজ্জামান মজুমদার। বাদীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আক্তারুজ্জামান। পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৬১-এ ধারায় সাধারণত আসামি বা দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির আবেদনে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। কিন্তু খালাসপ্রাপ্ত আসামির পক্ষের রায় চ্যালেঞ্জ করেন ধর্ষণের শিকার এ মামলার বাদী। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে অধস্তন আদালতের তলবকৃত নথিতে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়ায় তথা সন্দেহাতীতভাবে মামলাটি প্রমাণ হওয়ায় রায়টি বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়ার নজির ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৬১-এ ধারায় আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতায় প্রথম এই রায় দেওয়া হয়েছে। সাধারণত আসামিপক্ষ মামলা বাতিলের জন্য হাইকোর্টে আসেন। ৫৬১-এ ধারায় সাধারণত মামলাটি পুনর্বিচারের জন্য অধস্তন আদালতে পাঠানো হয়। তবে সরাসরি কারাদণ্ড প্রদান এটাই প্রথম।এজাহার মতে, ধর্ষণের শিকার নারী ধর্ষক কাছুম আলীর বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ২ জুলাইর ঘটনা উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) ধারায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানায় ২০০৬ সালের ২১ জুলাই মামলাটি দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে ২০০৬ সালে ৩১ অক্টোবর অভিযোগপত্র দেন। বিচারিক আদালতে ৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আসামিপক্ষ স্থানীয়ভাবে আপসের কথা বলে।তবে অভিযোগটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ার কথা বলে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল-২ আসামিকে খালাস দেয়। পরে সেই রায়ের বিরুদ্ধে বাদী হাইকোর্টে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৬১-এ ধারায় আবেদন করেন। হাইকোর্ট ২০২১ সালের ৩০ মে রুল জারিসহ অধস্তন আদালতের নথি তলব করেন। হাইকোর্ট রুল শুনানি শেষে এই রায় দেন। একইসঙ্গে বাদীর সন্তানের লালন-পালনের বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৩ ধারা মোতাবেক নির্দেশনা দেন।