প্রতিদিনের ডেস্ক
বিগত কয়েক বছর ধরে সাইবার অপরাধ বেড়েছে। সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পৃথক ইউনিটের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পুলিশের একটি পূর্ণাঙ্গ ‘সাইবার পুলিশ ইউনিট’ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধ এবং এর সঙ্গে যুক্ত ফাইন্যান্সিয়াল, ক্রাইম, মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধগুলো মোকাবিলায় ‘সাইবার পুলিশ সেন্টার স্থাপন’ করা হয়েছে। একটি পূর্ণাঙ্গ সাইবার পুলিশ ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে এরই মধ্যে ডিএনএ ল্যাব, আধুনিক ফরেনসিক ল্যাব, অটোমেটেড ফিঙ্গার প্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (আইএফআইসি) এবং আধুনিক রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়েছে। কয়েকটি বিভাগীয় শহরে এ সব ল্যাবের কার্যক্রম চলমান। ভবিষ্যতে প্রতিটি বিভাগে এ ধরনের ল্যাব স্থাপন করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।তিনি আরও বলেন, আমরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পুলিশে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) এবং কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) গঠন করেছি।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দমনে গঠন করা হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), হাইওয়ে পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট, স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন ও এমআরটি পুলিশ।শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তায় আর্মড পুলিশের ২টি এবং র্যাবের ১টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পুলিশের ব্যবস্থাপনায় জনপ্রিয় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ গত ছয় বছরে প্রায় সোয়া পাঁচ কোটি কল রিসিভ হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় সোয়া দুই কোটি সেবা প্রত্যাশীকে জরুরি সেবা প্রদান করা হয়েছে। জরুরি সেবা ৯৯৯-কে আরও সমৃদ্ধ করা হবে।
পুলিশ স্টাফ কলেজ এখন আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিসহ পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে আমরা যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা প্রশিক্ষণের উৎকৃষ্ট কেন্দ্রে পরিণত করেছি। পুলিশ সদস্যদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা খানা, ফাঁড়ি, তদন্তকেন্দ্র, ব্যারাক, আবাসিক ভবনের জন্য জমি বরাদ্দসহ এসব স্থাপনা নির্মাণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ২০ তলা এনসিকম ভবন, এসবি ও সিআইডির আধুনিক ভবন, ১০১টি আধুনিক থানা ভবন নির্মাণ করেছি। আরও অনেক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশে একটি পূর্ণাঙ্গ এভিয়েশন ইউনিট গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমে শিগগির দুটি হেলিকপ্টার যুক্ত হতে চলছে। বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক সেবা ও মোবাইল অ্যাপস প্রবর্তন, অনলাইন জিডি, ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য ই-সার্ভিস চালু করা হয়েছে। প্রতিটি থানায় নারী-শিশু-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। আমরা পুলিশের জনবল ব্যাপকহারে বৃদ্ধি করেছি। সুপার নিউমারারি পদ সৃষ্টি করে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়েছি। গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি। পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে অত্যন্ত পরিচালিত কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে পুলিশ ও সাধারণ জনগণ আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছেন।