৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

পুলিশ হোক আরো জনবান্ধব

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪ উদ্বোধন করেছেন। এবারের পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট পুলিশ, স্মার্ট দেশ, শান্তি ও প্রগতির বাংলাদেশ’। বাংলাদেশ পুলিশকে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্বমানের ‘স্মার্ট পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার জানিয়ে এ বাহিনীর সদস্যদের সেবার মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সচেষ্ট হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বিগত বছরের ভূমিকার জন্য পুরস্কৃত, উৎসাহিত করা হয়। এ সময় তারা তাদের দাবি-দাওয়া, চাহিদার কথাও জানান। এসব বিবেচনায় পুলিশ সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ সপ্তাহে বরাবরের মতো এবারো সমস্যা, চাওয়া-পাওয়া ও বিভিন্ন দাবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় রাখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ করে বলেছেন, জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করা তাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। সে দায়িত্বটা তাদের অবশ্যই পালন করতে হবে। জনবান্ধব পুলিশিংয়ের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে পুলিশ বাহিনীকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পুলিশ সদস্যরা দেশের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশে জননিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা ও দায়িত্ব বিরাট। দেশের জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর চ্যালেঞ্জ সহজেই অনুমেয়। চুরি-ছিনতাই ইত্যাদি রোধ তথা নাগরিকদের প্রাত্যহিক জীবনের নিরাপত্তা বিধান পুলিশের বড় দায়িত্ব। কিন্তু এসব মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। ইদানীং বেড়েছে সামাজিক অপরাধ-সহিংসতা। এসব রোধে করণীয় নির্ধারণ দরকার। এদিকে পুলিশ সদস্যদের একাংশের অপরাধে সম্পৃক্ত হওয়া এবং পুলিশ পরিচয়ে অপরাধ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্দেশ্যমূলক গ্রেপ্তার, অপহরণ, নির্যাতন, খুনের মতো বড় বড় অপরাধকর্মেও এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ত হওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। আবার ডিবি পোশাকে বা ডিবি পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তারের নামে অপহরণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজির ঘটনাও ঘটে চলেছে। বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ধরনের ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার প্রতিই মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি করে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। অপরাধী যেই হোক, তার শাস্তি নিশ্চিত করাই হলো অপরাধ দমনের প্রথম পদক্ষেপ। আর অপরাধ দমনের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মধ্যে যারা নিজেরাই অপরাধে লিপ্ত হবে, তাদের শাস্তি অধিকতর কঠোর হওয়া দরকার। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আমাদের চাওয়া, নতুন বছরে পুলিশের ইতিবাচক ভূমিকা ও পেশাগত কৃতিত্বই উজ্জ্বল হোক। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সামনে নিয়ে পুলিশ বাহিনী আগামী দিনে আরো জনবান্ধব হবে ও জননিরাপত্তায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করতে পারি।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়