নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর মুক্তিযুদ্ধে যশোরের প্রথম নারী শহিদ চারুবালা করের স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সংস্থার কাছে স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের দাবি জানিয়ে আসলেও সেটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবার নীলগঞ্জ মহাশ্মশান কমিটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে নির্মান কাজ শুরু করা হয়েছে। শহীদ চারুবালার ৫৩ তম শহীদ দিবস উপলক্ষে ৩ মার্চ রবিবার সকালে শহরের নীলগঞ্জ মহাশ্মশানে প্রথমবারের মতো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের জন্য নির্ধারিত স্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় নীলগঞ্জ মহাশ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতীম দেবনাথ রতি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সন্তু বিশ্বাস ভোম, উত্তম ধর, সুব্রত গুহ টুটুল, অমিত সাহা জয়, অশোক চক্রবর্তী, স্বপন সাহা, শ্যমল চক্রবর্তী, দ্বীপ সরকার ও বিষ্ণু সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও জেলা সাংস্কৃতিক জোটসহ যশোরের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শহীদ চারুবালা কর এর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। একই সাথে চারুবালা করের নিহতস্থল এলাকার শহীদ সড়কটি ‘ শহীদ চারুবালা কর সড়ক’ নামকরণ করবার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। একাত্তরের ৩ মার্চ পাকবাহিনীর টেলিফোন ভবন দখলের খবরে জনগণ একত্রিত হয়ে সেখানে এসে বিক্ষোভ করতে থাকেন। টেলিফোন ভবনের ছাদে অবস্থানরত পাকসেনারা গুলি শুরু করে। ওই ভবনের পশ্চিম পাশের একটি বাড়িতে বসবাস করতেন নিঃসন্তান পূর্ণচন্দ্র কর ও তার স্ত্রী চারুবালা কর। পাক সেনাদের একটি গুলি ঘরের চাল ভেদ করে চারুবালার মাথায় বিদ্ধ হয়। তিনি শহীদ হন। যশোর সদর হাসপাতালের মর্গে চারুবালার লাশ রেখে তালা মেরে দেয় পাক সেনারা। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা সন্ধ্যার দিকে মর্গের তালা ভেঙে চারুবালার লাশ বের করে আনেন। মিছিল সহকারে চারুবালার লাশ নীলগঞ্জ মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সৎকার শেষে সেখানে সমাধিস্থ করা হয়। কিন্তু সেই সমাধিস্থল পার্শবর্তিদের দ্বারা বেদখল হয়ে গেছে। খুঁজে পাওয়া যায়নি সমাধিস্থলে স্থাপিত শহিদ চারুবালা করের স্মৃতিফলক। নীলগঞ্জ মহাশ্মশানে চারুবালা করের দখলকৃত সমাধিস্থল উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ঠদের কাছে জোর দাবি জানান উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।