প্রতিদিনের ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিভিন্ন দেশ ব্যয় বাড়াচ্ছে। ইউরোপের পাশাপাশি এশিয়া অঞ্চলেও ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। চলতি বছর ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যয় ৪৪ বিলিয়ন ডলারে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যয় ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। সম্প্রতি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) এক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর আইডিসি।
আইডিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যয় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ চক্রাকার বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হারে সম্প্রসারিত হবে। এ অনুসারে, ২০২৭ সাল নাগাদ ৫ হাজার ৯০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
এতে আরো দেখা যায়, সামগ্রিকভাবে এআই প্রযুক্তিতে ব্যয় চলতি বছর ৩৫ শতাংশ বাড়বে এবং জেনারেটিভ এআইয়ের ক্ষেত্রে ব্যয় ১৬০ শতাংশ বাড়বে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চলতি বছর মূল আলোচনায় থাকলেও আগামী কয়েক বছরে এর পরিধি আরো বাড়বে। প্রযুক্তিবিশারদদের মতে, আগামী কয়েক বছর তথ্যপ্রযুক্তির সব খাতে বিনিয়োগের দিক থেকে জেনআই এগিয়ে থাকবে। চলতি বছর এআইয়ের ব্যবহার শুরু হলেও সামনের বছরগুলোয় পুরো প্রযুক্তি খাতেই আমূল পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদী বিশ্লেষকরা।
আইডিসির গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে জেনারেটিভ এআইতে ব্যয় চলতি বছর ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৭ সালের মধ্যে ২৬ শতাংশ হবে যা ১০১ দশমিক ৬ শতাংশ চক্রাকার বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হারে বাড়বে।
এর আগে পূর্বাভাস করা হয়েছিল ২০২৩ সালে ভারতে এআই বাজার ১৭০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। ইন্ডিয়া সিআইও সামিট ২০২৪-এ উপস্থাপিত গবেষণা অনুসারে, সফটওয়্যার বাজার আগামী তিন বছরে ধারাবাহিকভাবে দ্বিগুণ প্রবৃদ্ধি দেখবে বলে পূর্বাভাস করা হয়েছে।
আইডিসি প্রতিবেদনের আরো বলা হয়, ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা ও অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় এন্টারপ্রাইসগুলো গ্রাহকের সন্তুষ্টি বাড়াতে নতুন পণ্য ও পরিষেবা চালু করছে। পাশাপাশি রাজস্ব ও মুনাফা বৃদ্ধির জন্য অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।
২০২৩ সালে আইটি বাজেট বরাদ্দ মূলত সফটওয়্যার, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ও ক্লাউড মাইগ্রেশনের ক্ষেত্রে ছিল। গত বছর ভারতে ডিভাইসে ব্যয় ১২ শতাংশ কমলেও চলতি বছর তা ৮ শতাংশ বাড়বে। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো এআই সক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারে কেনার প্রতি আগ্রহী হয়েছে।
আইডিসির তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ও ডেপ্লয়মেন্টে ২৩, অ্যাপ্লিকেশনে ১৭, আইটি সেবায় ৬ এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসের জন্য ১৬ শতাংশ ব্যয় বাড়বে।
আইডিসি ইন্ডিয়া অ্যান্ড সাউথ এশিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বসন্ত রাও বলেন, ‘ভারতীয় এআই বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে ডিজিটাল স্থানান্তর অব্যাহত রয়েছে এবং তারা দ্রুত এআই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
আইডিসির অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট সারথ শ্রীনিবাসমূর্তি বলেন, ‘২০২৪-২৫ সালে জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোম্পানিগুলো উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করবে। ২০২৬ সালে কোম্পানিগুলো মানবসম্পদ, বিক্রয়, বিপণন ইত্যাদিতে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে জেনএআই ব্যবহার সম্প্রসারিত করবে।’
সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আঞ্চলিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্টিভেন ফ্রান্টজেনের মতে, ‘অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা ও অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও ২০২৪ সালে আইসিটি ব্যয় ৬ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’