মৌসুমের আগেই অনুমতি ছাড়া চুরি হচ্ছে সুন্দরবনের মধু

0
8

উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর
মধু আহরণের বন বিভাগের বৈধ অনুমতি দেওয়ার আগেই সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি হচ্ছে মধু। মাছ ও কাঁকড়া ধরার পাশ নিয়ে জেলে ও বাওয়ালিরা সুন্দরবনে প্রবেশ করে চুরি করে অপরিপক্ক চাঁকের মধু আহরণ করেছে। ফলে মৌসুমীর আগেই শুন্য হতে চলেছে সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকার মধুর চাঁক। এতে হতাশ হচ্ছেন প্রকৃত মৌয়ালরা। সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধুর দাম বেশি হওয়ায় অনুমতির আগেই বনবিভাগের নজর ফাঁকি দিয়ে এ কাজ করছে অসাধু জেলে -বাওয়ালীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সুন্দরবনের মধু আহরণে বনবিভাগের অনুমতি মিলবে আগামী ১ এপ্রিল। এ সময় থেকে বন বিভাগের পশ্চিম সুন্দরবনের আওতাধীন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন অফিস সরকারিভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে মধু আহরণের অনুমতি প্রদান করেন। এসময় জনপ্রতি ৫০ কেজি মধু আহরণ করতে পারবেন ১০ থেকে ১২ জনের একটি দলে। তবে অতিরিক্ত মধু আহরণের জন্য বাড়তি রাজস্ব দিতে হয় মৌয়ালদের। সাতক্ষীরা রেঞ্জের সুন্দরবন এলাকা থেকে গত বছর মধু আহরণের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল। প্রতি কুইন্টাল মধু আহরণের জন্য ৭৫০ টাকা, প্রতি কুইন্টাল মোমের জন্য ১০০০ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ ছিল। স্থানীয় মৌয়াল জানান, মধুর মৌসুমে একটা পরিপূর্ণ মধুর চাকে ২০/২৫ কেজি মধু পাওয়া যায়। ওই চাক থেকে ৬/৭বার ঐ পরিমাণ মধু সংগ্রহ করা যায়। কিন্ত যারা চোরা মধু আহরণকারী তারা অকালে আহরণ করার কারণে চাকে ৩শ থেকে ৫শ গ্রাম মধু পাওয়া যায়। ফলে বনবিভাগ থেকে বৈধ পাস নিয়ে সুন্দরবন গিয়ে কাঙ্খিত পরিমাণ মধু আহরণ করতে পারবেন না মৌয়ালরা। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। এ ব্যাপারে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ফরেষ্ট স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ বলেন, এ ব্যাপারে আমরা প্রত্যেক স্টেশন ও টিমকে চিঠি দিয়েছি। এ ধরনের অপতৎপরতা ঠেকাতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। তাছাড়া এই কাজে জড়িত কেউ ধরা পড়লে তার পারমিট বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম এ হাসান বলেন, বন বিভাগের কাছ থেকে মাছ ও কাঁকড়া ধরার পারমিট নিয়ে কিছু অসাধু জেলে ও বাওয়ালিরা অবৈধভাবে অপরিপক্ষ মধুর চাক কেটে মধু চুরি করে নিয়ে আসছে। তবে আমরা যাদেরকে সাসপেক্ট করছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ইতিমধ্যে অনেকের নামে মামলাও হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি।