১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

মানিক পালের কবিতা: অনিমা

প্রতিদিনের ডেস্ক:
এতগুলো বসন্ত পেরিয়ে গেছে তোমার আমার
একসাথে ঘর সংসার,
অথচ আজও তোমার কোনো আবদার, অভিযোগ পেলাম না!
তবে কি সেটা তোমার দয়া নাকি করুণা?
কেন এমন করে বললাম জানো অনিমা?
এতগুলো বছর কেটে গেল কখনো একটা ফুল নিয়ে
ঘরে ফিরে তোমার খোঁপায় গুঁজে দিলাম না,
কখনো বাদল দিনে দুজন মিলে ভিজলাম না
নিয়ম করে বিকেলে বেড়াতে যেতে হয়নি কখনো!
কখনো বলোনি, ‘এই চলো না আজ বিকেলে পার্কে বসে
কিছুটা সময় কাটাই?’মনে পড়ে এক বিকেলে বেড়াতে গিয়ে
একটা চাইনিজ রেস্তোরাঁয় ঢুকলাম,
কিন্তু তুমি বললে দই ফুচকা খাবে,
তাই ফুচকাওয়ালার কাছে যাওয়া!
মনে পড়ে বিয়ের পরে নিজের ইচ্ছেতে পাঁচখানা শাড়ি কিনে এনে
তোমার কত বকুনি খেতে হলো আমার!
সেই শাড়িগুলো কত্ত যতনে রেখে দিয়েছো আলমারিতে তুলে,
পুত্রবধূকে পরাবে বলে!
কিন্তু তখনো তোমার আমার কোনো সন্তানই আসেনি,
যদিও একখানা শাড়ি পরেছিলে কয়েকদিন
আমার শখের কেনা বলে!
মনে পড়ে এক শীতের রাতে আমি কবিতা লিখছিলাম,
তুমি পাশে বসে আমার জন্য উলের সোয়েটার বুনছিলে।
আমি কবিতা লেখা শেষ করলে তুমি শুনতে চাইলে কবিতাটি।
আমি তোমার কাছে দিয়ে বললাম তুমি পড়ে নাও।
কবিতাটি পড়ে তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে ভীষণ আদর করলে,
কারণ লেখাটি ছিল তোমাকে নিয়ে। আর কবিতাটির
নাম ছিল ‘প্রিয়তমা’।
তুমি সর্বদাই আমার কবিতা ভালোবাসতে, আমাকে লিখতে প্রেরণা জোগাতে
আর আমাকে হাসিখুশি দেখতে চাইতে।
বলতে, ‘আমার কিছু চাই না, শুধু তোমাকে সুস্থ দেখতে চাই।’
তোমার ভালোবাসার প্রকাশটা বড্ড ভিন্নরকম অনিমা।
জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে মনে হয়
তোমার এমন ভিন্নরকম ভালোবাসাই
আমাকে তোমার প্রতি হেঁয়ালি করে তুলেছে, আর তাই
আমি হয়ে গেছি তোমার কবি।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়