১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা আর চাই না

দীর্ঘদিন ক্ষমতার ছোঁয়া না পেলেও পিছিয়ে নেই নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম। দেশের ছোট থেকে বড় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে তাদের নীরব কর্মকাণ্ড। গোপনে বিভিন্ন আড্ডা ও নামে-বেনামে ছোট ছোট সংগঠন তৈরি করে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে তারা। বিশেষ করে দেশে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক উস্কানি দিতে তাদের তৎপরতা সব সময় টের পাওয়া যাচ্ছে। ছাত্ররাজনীতি ইস্যুতে আবারো উত্তপ্ত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। সাড়ে চার বছর আগে ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে এক ছাত্র নিহত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনে রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় বুয়েটে। এতদিন পর হঠাৎ আবার একই দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বুয়েট ক্যাম্পাস। গত বুধবার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বুয়েট ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বরে আসা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। প্রকাশ্যে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলা হলেও আন্দোলনকারীদের মূল টার্গেট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ঠেকানো- সেটা তাদের কথাবার্তায় স্পষ্ট। আর এই আন্দোলনের নেপথ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের উসকানি রয়েছে। যা ওপেন সিক্রেট। আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে হলেও মূল কলকাঠি নাড়ছে এই সংগঠন দুটি। গত বছর টাঙ্গুয়ার হাওরে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বুয়েটের ২৪ জন ছাত্র পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা এখন সবাই জামিনে আছেন। জামিন পেয়েই এরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। বুয়েট মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট করে তারা বৈঠকও করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী, এরাই মূলত সামনে ও পেছন থেকে এই আন্দোলনে উস্কানি দিচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বুয়েটের চলমান আন্দোলনে পেছন থেকে কেউ ইঙ্গিত দিচ্ছে কিনা, পেছন থেকে কেউ কি জঙ্গিবাদী কিংবা উগ্রবাদী মানসিকতার কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছে কিনা, সেটা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ এই আলোচনাটা বারবার আসছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও অনেকে অভিযোগ করেছেন কিছু জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী গোপনে সেখানে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এমন একটি আলোচনা-সমালোচনা ছিল। সে বিষয়টি আমরা আরো গভীরভাবে তদন্ত করব। তবে চলমান আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীসহ উভয় পক্ষকে আহ্বান জানাব, সেখানে শিক্ষার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মন্ত্রী আরো বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, আমাদের তদন্ত যারা করছে জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করে কাউন্টার টেররিজমের বিশেষ টিম আছে; তারাও কাজ করবে। সেটা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়, সব প্রতিষ্ঠানে। আমরা চাই বুয়েটে আর কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটুক এবং যত দ্রুত সম্ভব চলমান আন্দোলনের সব দিক খতিয়ে দেখে সঠিক সমাধান দেয়া হোক। পাশাপাশি দেশকে অস্থিতিশীল করতে যেসব নিষিদ্ধ সংগঠন তৎপর তাদের প্রতি প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হোক।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়