২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

দ্রুত ব্যবস্থা নিন

খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেওয়ার অর্থ ভোক্তাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া। ক্যান্সার সৃষ্টি, লিভার-কিডনি বিকল হওয়া, আন্ত্রিক রোগসহ আরো অনেক অসুখের সাম্প্রতিক বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণও মনে করা হয় এই ভেজাল খাদ্যকে। বাজারে অনেক পণ্যেই এমন ক্ষতিকর ভেজাল পাওয়া যায়, যা ভোক্তার মৃত্যুর কারণও হতে পারে। ভেজাল প্রতিরোধে কঠোরতার অভাবে ভেজাল ক্রমে সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে। তার প্রমাণ কালের কণ্ঠে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি খবর। ‘ভাঙ্গুড়ার নকল দুধ যায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়’ শিরোনামের ওই খবরে বলা হয়েছে, পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বিপুল পরিমাণে নকল দুধ তৈরি হচ্ছে। আসল দুধের সঙ্গে এসব নকল দুধ মিশিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। সয়াবিন তেল, কস্টিক সোডা, চিনি, লবণ এবং অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান ও পানি মিশিয়ে দুধ তৈরি করে এই নকল দুধ অর্ধেক পরিমাণ আসল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময়সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতা ও সুধীসমাজের নেতারা এমন কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে কঠোর হাতে তা দমনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাঁরা বলেছেন, ভেজাল দুধ ব্যবসায়ীদের সংখ্যা দিন দিন উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। এই দুধ শুধু বাইরেই বিক্রি করেন না ওই ব্যবসায়ীরা। এলাকায়ও বিক্রি করেন।
তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে আমরা খাচ্ছি কী? কী খাচ্ছি আমরা, এই প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ শুধু ভাঙ্গুড়ায় দুধ ভেজাল হচ্ছে, তা নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে খাদ্যপণ্যে ভেজাল মেশানো হচ্ছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে ভেজাল খাবার বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ অনেক পুরনো। বাজার থেকে ভেজাল খাদ্য কিনে অসুস্থ হচ্ছে অনেকেই। কয়েক বছর আগে ভেজাল নিয়ে একটি গবেষণার ফল গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গত বছর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা থেকে জানা যায়, দেশের ৫৪ শতাংশ খাদ্যপণ্যে ভেজাল রয়েছে। জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের পণ্যই ভেজাল হচ্ছে। এটি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নেওয়া উচিত। ভাঙ্গুড়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নকল দুধের বিষয়ে তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। অসাধু দুধ ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তথ্য নিয়ে তালিকা করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করে তাঁদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হবে। কোনোভাবেই এসব অসাধু ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা চাই, মারাত্মক ক্ষতিকর এই ভেজাল প্রক্রিয়া দ্রুত বন্ধ হোক এবং ভেজালকারীদের আইনের আওতায় আনা হোক।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়