নিজস্ব প্রতিবেদক
ছুটি শেষে ভারত থেকে ফিরতে শুরু করেছেন পাসপোর্টধারী পর্যটকরা। এতে বন্দরে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শণীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে তারা ভারতে গিয়েছিলেন। ১৬ এপ্রিল থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট পর্যন্ত সময়ে সাড়ে ১৫ হাজার ৪২২ পর্যটক দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে ১৬ এপ্রিল ৪৯১০ জন ১৭ এপ্রিল ৫৩৬৩ জন এবং ১৮ এপ্রিল ৫১৪৯ জন পর্যটক দেশে এসেছে। জানা যায়, এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। টানা পাঁচ দিন বন্ধ ছিল দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে করে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ রেখেছিল। এতে লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা,ব্যবসা,দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকে গিয়েছিলেন ভারতে, আবার অনেকে ভারত থেকে ফিরে আসছেন। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে এখন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় বন্দরে কাজ করছে বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরের নিরাপত্তা কর্মীরা। ভারত থেকে ফিরে আসা সুভাষ মাষ্টার জানান, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন।ভারতের পেট্রোপোলে লম্বা লাইনে যে ভিড় তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে পর্যাপ্ত ডেস্ক থাকলেও অফিসার কম থাকায় তাদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ভারত ফেরত মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, এবার টানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে বেড়ানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে ভারত গিয়েছিলাম। ছুটি শেষ হওয়ায় তাকে দেশে ফিরতে হয়েছে।তবে আজ ফিরে আসার সময় বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দূর্ভোগ শিকার হতে হয়েছে। ডেস্কের পরিমাণ বেশি থাকলে ও অফিসার বসেন মাত্র তিনজন। কাজও করেন ধীরগতিতে। এদিকে ভারত ফেরত অধিকাংশ পর্যটক অভিযোগ করে বলেন, দূরপাল্লার বাসে সিট সংকটের কথা বলে ভাড়া বেশি আদায় করছে পরিবহণ কাউন্টারগুলো। সাধারণ সময় ঢাকার ভাড়া পরিবহন ভেদে জনপ্রতি ননএসি ৫৫০-৭৫০ টাকা ও এসি ১০০০-১২০০ টাকা হলেও এখন চাইছে নন এসি ৮০০ টাকা ও এসি ১৫০০-২০০০ টাকা। ফেরার পথে পকেটে টাকা কম থাকায় কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে তাদের। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করেন। ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় একশো ৫০ কোটি টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের একশো ৪০ কোটি টাকা আয় হয়। সে হিসাবে সেবার মান একেবারে বাড়েনি। বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্র্যাফিক) রেজাউল করিম জানান, ঈদের ছুটিতে গত এক সপ্তাহে হাজার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক ভারতে যান। ছুটি শেষ হওয়ায় ভারত ফেরত পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। পাসপোর্টধারী পর্যটকদের পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে পারেন সেজন্য বন্দরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কামরুজ্জামান বিশ্বাস জানান, গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ে ১৫ হাজার ৪২২ জন পাসপোর্টধারী পর্যটক দেশে ফিরেছেন। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি থাকায় মানুষ ঘুরতে ও চিকিৎসার জন্য ভারত যান। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে দ্রুত পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে ডেস্ক অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।