উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে মধূ সংগ্রহকালে এক দল মৌয়ালের মধু লুটের পর তাদের মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। কৈখালী রেঞ্জের আওতাধীন দাড়গাং নদীর ত্রিমোহনী এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। মধু কাটার জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে অপর একদল মৌয়াল তাদের মধু লুটের পর কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের উপস্থিতিতে মারপিট করে বলে অভিযোগ। আহত মৌয়াল দলের সদস্যরা লোকালয়ে ফিরে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছে।
ভুক্তোভোগী মৌয়াল দলনেতা পিয়ার আলী জানান তারা চয়জনের একটি দল গত ১৩ এপ্রিল কৈখালী স্টেশন থেকে পাশ(অনুমতিপত্র) নিয়ে সুন্দরবনে যায়। টানা কয়েকদিন মধু সংগ্রহের পর গত বুধবার মৌয়াল দলটি দাড়গাং এলাকায় পৌছে মধু কাটে। এসময় হরিনগর এলাকার ১০ জনের অপর একটি মৌয়াল দল ঐ এলাকা নিজেদের দাবি করে তাদের সংগৃহীত ৪৪ কেজি মধুর একটি ড্রাম ছিনিয়ে নেয়। শুরুতে তারা রায়নগর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সাহায্য কামনা করে ব্যর্থ হয়ে কৈখালী কোস্টগার্ড ও কৈখালী বনবিভাগের শরনাপন্ন হয়। এক পর্যায়ে বনবিভাগ ঘটনাস্থলে পৌছে উভয় পক্ষকে নিয়ে স্টেশনে ফেরার পথে ত্রিমোহনী এলাকায় পৌছালে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ সদস্যরা তাদের আটকে দেয়। এসময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে তাদের বেপরোয়া মারধর করা হয়। বৃহস্পতিবার লোকালয়ে ফিরে বিষয়টি তারা সাতক্ষীরার র্যাব টহলফাঁড়িতে অবহিত করেছেন। এলাকায় ফিরে শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ জানাবেন।
গুরুতর আহত হযরত গাইন বলেন তাদের বাঘের মুখ থেকে সংগ্রহ করে আনা তাদের প্রায় ষাট হাজার টাকার মধু লুটে নেয়া হয়েছে। অভিযোগ দিলেও বনবিভাগসহ কোন পক্ষই তাদের উপর হওয়া জুলুমের বিচার করছে না।
এবিষয়ে রায়নগর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি মাইদুল ইসলাম জানান স্টেশনের বাইরে থাকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে অবগত নয়। তবে সোমবার কর্মস্থলে ফিরে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড কৈখালী বিসিজি স্টেশনের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কামাল বলেন পিয়ার আলীসহ তার সঙ্গীরা দাবি করেছিল ভারতীয় জলদস্যুরা তাদের উপর হামলা করেছিল। তবে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখা যায় বৈধভাবে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহে যাওয়া স্থানীয় দু’পক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আরও জানান পিয়ার আলী ও তার সঙ্গীরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভুল তথ্য দিয়ে বরং বিভ্রান্ত করেছেন।সুন্দরবন কৈখালী স্টেশনের ইনচার্জ সজল কুমার দ্বীপ বলেন, তিনি প্রশিক্ষনে থাকায় স্টেশনে ফিরে ঘটনার বিস্তারিত খোঁজ নেবেন।শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।