গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীসহ সারাদেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বাড়ছে নানা রোগব্যাধি। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালেই প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ভর্তি হচ্ছে ২০ জন রোগী। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলেই ডায়রিয়ার জন্য দায়ী জীবাণুগুলো শক্তিশালী হয়ে থাকে। পানি ও ঠাণ্ডা-বাসি খাবারে জন্ম নেয়া এ জীবাণু মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। তখনই ডায়রিয়া হয়। এছাড়া ঋতু পরিবর্তন ও বায়ু দূষণজনিত কারণে শিশুদের সর্দি, নাক বন্ধ হওয়া ও হাঁচি-কাশি, তীব্র জ¦র ও গলাব্যথার মতো রোগ হচ্ছে। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২০৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের তথ্যমতে, গত ৭ থেকে ১৭ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪ হাজার ৮৮৮ জন। প্রতিদিন গড়ে ৪৮৮ রোগী ভর্তি হচ্ছে এ হাসপাতালে। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে মহামারির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বছরে দুবার ডায়রিয়া মৌসুম আসে। একবার মার্চ-এপ্রিল। এ সময়কে ডায়রিয়ার প্রি-মৌসুম বলা হয়। দ্বিতীয়বার আগস্ট-অক্টোবর মাস। এই সময়কে পোস্ট মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এ সময় রোগীর চাপ বেশি থাকে। আর গরমের সময়ে ডায়রিয়ায় শিশুদের সংখ্যা থাকে কম, বড়রা বেশি আক্রান্ত হন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিক কারণেই বেশকিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা প্রহণের প্রয়োজন পড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মানুষের করণীয় কিছু নেই, তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ডায়রিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মধ্যে পানি ফুটিয়ে পান করা অন্যতম। এছাড়া ডায়রিয়া হলে স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার, যেমন- ডাবের পানি, চিড়া ভিজিয়ে তার পানি, ডালের পানি, ভাতের মাড়, চালের গুঁড়ার জাউ ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। রাস্তার পাশের খোলা খাবার বা শরবতজাতীয় পানীয় পরিহার করতে হবে। যে কোনো খাবার গ্রহণের আগে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করাও ডায়রিয়া প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। শিশুদের ক্ষেত্রে মায়ের দুধসহ অন্যান্য খাবার তাদের যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়ানোই সমীচীন। পাশাপাশি কলা, চিড়া ও ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। আর পানিশূন্যতা দেখা দিলে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। তবে কোনোভাবেই বাসি খাবার দেয়া যাবে না। সাধারণ ডায়রিয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক না দেয়ারও পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। সর্বোপরি জনসাধারণকে ডায়রিয়া রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। হাসপাতালে যেসব বৃদ্ধ ও শিশু ভর্তি হচ্ছে তারা বেশির ভাগই দরিদ্র। তাদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ ও সময়মতো চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে হবে এ সময়।
এখনই প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে
Previous article
Next article
আরো দেখুন
১৮ হাজার শ্রমিকের জন্য সুখবর
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস জনশক্তি রপ্তানি। মালয়েশিয়া একসময় দেশের অভিবাসী কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ১৯৮৯...
সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হোক
উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে মানুষের মৌলিক অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশে তার উল্টো পরিস্থিতি তৈরি...