মেহেরপুর প্রতিনিধি
কয়েকদিন ধরে মেহেরপুরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তীব্র গরমের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময় পার করছেন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ জেলা দুটিতে শুক্রবার সকাল ৯টায় ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৫ শতাংশ। দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৯ শতাংশ। এরপর আরও বেড়ে বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। এটিই দেশে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। জামিনুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দীর্ঘদিন জেলায় বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে গরমের তীব্রতা বাড়ছে। এ ধারা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
শুক্রবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও গাংনী উপজেলা শহর এলাকায় প্রচণ্ড তাপদাহে পিপাসা মেটাতে শরবতের দোকানগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায় তৃষ্ণার্ত মানুষকে। দোকানে বিক্রি হচ্ছে বেলের শরবত। আবার কোথাও কোথাও লেবুর শরবত। পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ডাব ও আখের রস। এছাড়া পিপাসা নিবারণে সাধারণ মানুষকে রাস্তার পাশের দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির কোমল পানীয় ও মিনারেল ওয়াটার কিনে পান করতে দেখা গেছে। গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার লেবুর শরবত ও আখের রসের দোকানে দেখা গেছে প্রচণ্ড ভিড়। গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার শরবত বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, যত গরম বাড়ছে তত শরবত বিক্রি বাড়ছে। কয়েকদিন ধরে গরম পড়ছে। প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ হাজার টাকার শরবত বিক্রি হয়। লেবু, চিনি, তোকমা দানা, ইসবগুলের ভুসি ও বরফ দিয়ে শরবত তৈরি করা হয়। এর মধ্যে খারাপ কিছু নেই। গাংনী উপজেলা শহরের আখের রস বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, গরমের সঙ্গে সঙ্গে বেচা-বিক্রিও বেড়েছে। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার আখের রস বিক্রি করেন তিনি। এদিকে ডাব বিক্রেতা সাবান আলী জানান, ডাবের প্রচুর চাহিদা। এ গরমে মানুষ শরীর কড়ার হাত থেকে বাঁচতে ডাবের প্রতি ঝুঁকছেন। এদিকে তীব্র গরমে বাড়ছে নানা রোগবালাই। বিশেষ করে ডায়রিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আগের তুলনায় বেশি। মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, এ গরমে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। পিপাসা মেটাতে ফুটপাতের শরবত, পানি পান থেকে বিরত থাকতে হবে।