সুন্দর সাহা
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে শার্শা উপজেলায় তিন পদে ১৩ প্রার্থী মনোনায়ন জমা জমা দিয়েছেন। যার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনায়নপত্র জমা দিয়েছেন। রোববার শার্শা উপজেলা নির্বাচন কমিশনের কাছে তাদের মনোনায়নপত্র জমা দিয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে অঘোষিতভাবে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন। এছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মিন্নু, বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মনজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অহিদুজ্জামান অহিদ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে শাহরিন আলম বাদল, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুর রহিম, তরিকুল ইসলাম মিলন ও শহিদুল ইসলাম মন্টু। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলেয়া ফেরদৌস, নাজমুন্নাহার ও শামিমা খাতুন। এদিকে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে চরম ক্ষোভ-হতাশা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাতাসে গুঞ্জন ছড়িয়েছে শার্শা -১ আসনের জাতিয় সংসদ কর্তৃক একজন চিহিৃত দুবৃত্ত এবং চোরচালান ও অস্ত্র ব্যবসার মহানায়ককে সমর্থন জানানোর জন্য এরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে শার্শার আওয়ামী লীগ নেতা কমীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। নেতা কর্মীরা ইতিমধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনে দলীয় এমপি মন্ত্রীদের সমর্থন জানাতে নিশেধ করেছেন, সেখানে শার্শা আসনের এমপি কি ভাবে একজন চিহিৃত একাধিক মামলার আসামিকে সমর্থন জানায়। শার্শা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অহিদুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে মনোনায়ন দলীয় কোন সিদ্ধান্ত নয়। এটি ব্যক্তি এমপি আফিল উদ্দীনের নিজের পছন্দ।’ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল বলেন, ‘টাকা পয়সার বিনিময়ে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাকে প্রার্থী করা দলীয় কোন সিদ্ধান্ত নয়। এটি এমপি আফিল উদ্দীনের পছন্দের মনগড়া সিদ্ধান্ত। এমপি সাহেব তার নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য তাকে সমর্থন দিয়েছেন।’ উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, ‘যার বিরুদ্ধে মতিয়া চৌধুরীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ষ্টেজ ভাঙ্গা মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার মামলা, র্যাবের হাতে অস্ত্র গুলিসহ আটক, চোরাচালনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এখন শেখ আফিল উদ্দিন এখানকার এমপি। কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। তিনি যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাই তো হচ্ছে।’ এসব নিয়ে শার্শা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি। স্বার্থে আঘাত লাগায় দীর্ঘ দেড় যুগ ‘প্রভুর’ পদলেহনকারীরা এখন ‘প্রভু’র পিণ্ডি চটকাচ্ছে। সরকারি গাড়ি নিয়ে গোগা, বাগআচড়া ও কায়বা থেকে সদ্য বিগত সংসদ নির্বাচনে আশরাফুল আলম লিটনের পোলিং এজেন্ট বের করে দেয়ার হোতার মুখে এখন প্রভুর সমালোচনার খই ফুটছে! মনোনয়ন না পেয়ে এখন আবাল-তাবোল বকছে প্রভুর অপকর্মের সাবেক শিপাহশালার। তার সাথে সুর মিলিয়েছেন নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নেয়ার হোতা। ইনিও মনোনয়নের লোভে বিগত সংসদ নির্বাচনের আগে এবং পরে ট্রাক প্রতীকের কর্মীদের ঠ্যাঙানো গ্রুপের আরেক নেতা ছিলেন। মেম্বার হওয়ার যোগ্যতা না থাকলেও উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখতের স্বঘোষিত এই নেতা। এখন মোহ মঙ্গ হওয়ায় বিলাপ বকছেন। সব মিলিয়ে শার্শা আওয়ামী লীগে বিরাজ করছে অরাজক এক পরিস্থিতি। যা শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।