রেজাউল করিম, লোহাগড়া
নড়াইলে ইতি বেগম (৪০) নামক এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (২১ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার গোবরা গ্রামে নিজেদের ঘর থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইতি গোবরা গ্রামের মাওলানা শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। শফিকুল লোহাগড়া উপজেলার মোচড়া বায়তুন নূর জামে মসজিদের ইমাম। পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, স্বামী শফিকুল ইসলাম লোহাগড়ার মোচড়ার মসজিদে ইমামতি করায় স্ত্রী ইতি বেগম গোবরায় বাড়িতে একা থাকতেন। শফিকুল মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। শফিকুলদের বাড়িতে বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার দিনমজুর মনিরুল মোল্যা ভাড়া থাকতেন। মাস দুয়েক আগে মনিরুল তার পরিবারকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে ওই ভাড়াবাড়িতে একাই অবস্থান করেন। ঈদের ছুটি কাটিয়ে ইমাম শফিকুল গত ১৭ এপ্রিল কর্মস্থল লোহাগড়ায় আসেন। এরই মধ্যে রবিবার রাতে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি জানতে পারেন। শফিকুলের প্রতিবেশীরা জানান, গত ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে ইতি বেগম এবং ভাড়াটিয়া মনিরুলকে বাড়িতে দেখেননি। দুটি ঘরই তালাবদ্ধ পান। অনেকে ধারণা করেন, শফিকুলের স্ত্রী ইতি এবং ভাড়াটিয়া মনিরুল কোথাও বেড়াতে গেছেন। তবে রবিবার শফিকুলদের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে বিষয়টি অনেকেরই সন্দেহ হয়। ঘটনাটি প্রতিবেশীরা শফিকুলসহ পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শফিকুলের ভাড়াটিয়া মনিরুল মোল্যার ঘরের খাটের নিচ থেকে ইতি বেগমের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে। ইমাম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ ২২ বছর ধরে আমরা সংসার করছি। দাম্পত্যজীবনে আমাদের সন্তান হয়নি। তবে আমাদের মধ্যে ভালোবাসার কমতি ছিল না। বিশ্বাস করে বাগেরহাটের মনিরুলকে বাড়িতে ভাড়া দিয়েছিলাম। মনিরুল আমার স্ত্রীকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার যথাযথ বিচার চাই।’ এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ইতি বেগমের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ধারালো অস্ত্র জব্দ করেছি। সন্দেহভাজন পলাতক মনিরুল মোল্যাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।’