মোমিনুর রহমান, ফুলতলা
খুলনার ফুলতলা উপজেলার গিলাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল হোসেনের বিরদ্ধে নিয়োগ নিয়ে প্রতারণামূলক অনিয়েমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়টির কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর নিয়োগে জেলা শিক্ষা অফিসের(ডিইও) অনুমোতিপত্রের মিথ্যা কথা বলে বোর্ড গঠন করে প্রতারণামূলক নিয়োগের অভিযোগ করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল হক। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অদক্ষতা ও ব্যক্তিস্বার্থেকারণে বিদ্যালয়ের চার দফা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও জনবল নিয়োগে ব্যার্থতার অভিযোগ করেছে বিদ্যালয়ের সাবেক এই সভাপতি। জেলা শিক্ষা অফিসের নামের ভুয়া ও মিথ্যা অনুমোতিপত্রে কথা বলে নিয়োগ বোর্ড গঠন করা সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আড়াই বছরেরও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট প্রেরিত বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ও সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল হকের লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, গিলাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্প্উিটার ল্যাব অপারেটর পদে ২০২১ সালে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ডিইও এবং বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির অনুমোতি ছাড়াই বিধি লঙ্ঘন করে ২০২১ সালের ১২ আগস্ট খুলনা গভ. ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন গিলাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল হোসেন। তিনি জেলা শিক্ষা অফিসের চিঠি আছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আয়োজন করেন। নির্ধারিত পদে মোট ৫জন প্রার্থী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সকল কিছু ঠিকঠাক থাকলেও প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল হোসেন জেলা শিক্ষা অফিসের কোন চিঠি দেখাতে না পারায় সেই সময় ফুলতলা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা বেগম নিয়োগটি বাতিল করেন। এ বিষয়ে অভিযোগকারী মো. আব্দুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অদক্ষতা, ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং নীতিমালা না মানার কারনে চারদফা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও তিনি জনবল নিযোগ দিতে ব্যার্থ হয়েছে। এছাড়াও তিনি কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে তার পছন্দে ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে না পারায় ঐ নিয়োগে অনিয়ম, প্রতারণা ও গুরুতর মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন বলে আব্দুল হক জানায়। এ বিষয়ে ফুলতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা বেগম মুঠোফেনে দৈনিক প্রবাহকে বলেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল হোসেন মিথ্যা কথা বলে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমি জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার রুহুল আমিন স্যারের সাথে যোগাযোগ করে নিয়োগটি বন্ধ করে দেই। তিনি জানায়, তেলিগাতী গভ.ল্যাবরেটরি স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষার সকল আয়োজন সম্পন্ন করে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রধান শিক্ষকের নিকট জেলা শিক্ষা অফিসের ডিজির প্রতিনিধির চিঠি চাওয়া হলে গিলাতলা মাধ্যমিক বিধ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিঠি দেখাতে পারিনি। তিনি জানায় আমি চিঠিটি ভূল করে বিদ্যালয়ে ফেলে রেখে এসেছি আনতে পাঠিয়েছি আপনারা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করেন। শেষ পর্যণÍ তিনি জেলা শিক্ষা অফিসারের চিঠি দেখাতে না পারায় নিয়োগটি স্থগিত করা হয়েছিল। তিনি বলেন প্রধান শিক্ষক এভাবে মিথ্যা কথা বলতে পারে তা আমি বুঝতে পারিনি। বিষয়টি আমি তৎকালিন জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার রুহুল আমীন স্যার এবং ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিনকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলাম। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন নিয়োগ কেন বন্ধ হয়েছিল সেটা কি সাংবাদিককে বলতে হবে। আমার দপ্তর আছে আমি আমার দপ্তরকে জানিয়েছি সাংবাদিকে কে কেন বলতে হবে আর এটা সাংবাদিকের কাজ না। উল্লেখ্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের উদ্দেশ্যমূলক অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের মাধ্যমে দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল হোসেনের প্রতারণামূলক আচারণের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনে জেলা শিক্ষা অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা), ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গত ২১ এপ্রিল লিখিত দিয়েছেন বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল হক।