শুল্ক কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে চুক্তি করবে বাংলাদেশ-ভুটান

0
5

প্রতিদিনের ডেস্ক
কাস্টমস সম্পর্কিত তথ্য ও প্রতিবেদন আদান প্রদান এবং উভয় দেশের শুল্ক কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে বাংলাদেশ-ভুটান। এজন্য উভয়পক্ষই কাস্টমস মিউচুয়াল অ্যাসিসটেন্স এগ্রিমেন্ট (সিএমএএ) সই করতে সম্মত হয়েছে। দ্রুতই এ চুক্তি সই হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে নবম বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভায় এ বিষয়ে সম্মত হয়। ২৪-২৫ এপ্রিল ভুটানের থিম্পুতে অনুষ্ঠিত হয় এ সভা। শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ভুটান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দেশটির শিল্প বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান সচিব তাশি ওয়াংমো। উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদলে দুদেশের রাষ্ট্রদূতরা অংশগ্রহণ করেন।
সভার সূচনা বক্তব্যে উভয় দেশের বাণিজ্য সচিব দু’দেশের মধ্য বিরাজমান সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। বৈঠকে উভয়পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।
এরমধ্যে বিশেষ করে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা প্রশমন এবং রপ্তানি সুবিধা বৃদ্ধি, বিনিয়োগ, ট্রানজিট এবং যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতা, পর্যটন, কাস্টমস ও ল্যান্ড পোর্টের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ দূরীকরণে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ভুটানকে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করার লক্ষ্যে বিবিআইএন এমভিএ কাঠামোতে পুনরায় যোগদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। জবাবে ভুটান বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনার আশ্বাস দেয়।
উভয় দেশের বাণিজ্য সচিব অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সম্পাদনের ফলে দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। উভয়পক্ষই বিদ্যমান বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় অতিরিক্ত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে সম্মত হয়।
এছাড়া বাংলাদেশ ও ভুটান ট্রাফিক ইন ট্রানজিট চুক্তি এবং এর প্রটোকল বাস্তবায়নের জন্য পরীক্ষামূলক রপ্তানি-আমদানি (ট্রায়াল রান) পরিচালনার জন্য সম্মত হয়। এসময় উভয় সচিব ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফরের সময় গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেন।
ভুটান প্রতিনিধি দলের প্রধান মিসেস তাশি ওয়াংমো উল্লেখ করেন, ভুটান বরাবরই নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্যের সমৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি অনুসরণ করে। করোনা মহামারি, ধীর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি এবং অন্যান্য ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বাংলাদেশে স্থিতিশীল এবং টেকসই উন্নয়ন দৃশ্যমান গতিতে বাড়ছে।তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ হিসেবে ভুটান সবসময় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক শান্তি ও অগ্রগতির প্রয়োজনে বাংলাদেশকে সমর্থন করে আসছে।
বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভার পাশাপাশি সচিব তপন কান্তি ঘোষ ভুটানের শিল্প বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নামগেল দর্জি এবং পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্যে সংক্রান্ত মন্ত্রী ডি এন ধুঙ্গেলের সাথে সাক্ষাত করেন।
সাক্ষাতকালে উভয় মন্ত্রীই ১৫ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অগ্রগতি সাধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভুটানের বিবিআইএন-এমভিতে পূর্ণ সদস্য হিসেবে পুনঃঅন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিবেচনাধীন এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।