প্রতিদিনের ডেস্ক
চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দলীয় কঠোর অবস্থানেই থাকছে ভোট বয়কট করা বিএনপি। সংগঠনে যেকোনো মূল্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দলটি। তাই প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রার্থী থাকায় এরই মধ্যে দল থেকে তৃণমূলের ৭৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে থাকা দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও শিগগিরই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে তারা। এর অংশ হিসেবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়ায় এরই মধ্যে ৬১ নেতাকে শোকজ করেছে বিএনপি। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ছয়জন রয়েছেন। দলের নির্দেশনার পরও তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে কিংবা কেউ জবাব না দিলে তাদের দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছে দলটি। ফলে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের অবস্থানে থাকা বিএনপির বহিষ্কারের সংখ্যা দীর্ঘ হবে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে পাঠানো শোকজের চিঠিতে তাদের ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা শোকজ চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপির নেতা হিসেবে আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় দফায় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আপনার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। সুতরাং দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ অনেকের অভিমত, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে হামলা-মামলা, গ্রেফতারে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অনেকটাই বিপর্যস্ত, হতাশাগ্রস্ত। এমন অবস্থায় উপজেলা নির্বাচন ঘিরে এভাবে গণহারে বহিষ্কারের ঘটনায় তৃণমূলে নতুন করে হতাশা ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামীতে সংগঠনের জন্য বুমেরাং হতে পারে। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে কয়েকজন নেতা বহিষ্কার হলেও তাতে তাদের দলের কোনো ক্ষতি হবে না। বিএনপির তৃণমূল অত্যন্ত প্রাণবন্ত। সেখানে কোনো হতাশা নেই। তারা আরও বলছেন, যারা ভোটে রয়েছেন, তারা সুবিধাবাদী লোক। জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না এটা দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত। এরপরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন আমরা তাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছি একাধিকবার। দুই একজন সাড়া দিলেও অধিকাংশ নেতা নির্বাচনে আছেন। ফলে এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে দল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপেও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদের শোকজ করা হয়েছে।’