প্রতিদিনের ডেস্ক:
পশ্চিমবঙ্গজুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এই ভয়ংকর উত্তাপের হাত থেকে রেহাই পায়নি কলকাতাও। গত কয়েক বছরে এত গরম পড়েনি তিলোত্তমায়। কিন্তু এবার নগরীতে তাপমাত্রার পারদ সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এমন গরমে মানুষজনকে জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু সেটি মেনে চলার উপায় নেই ট্রাফিক পুলিশদের।রোদ, ঝড়, বৃষ্টি- আবহাওয়া যেমনই হোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে দায়িত্বপালন করতে হয় ট্রাফিক পুলিশদের। অনেক সময় তীব্র গরমে অসুস্থবোধ করলেও রাস্তা ছাড়ার উপায় থাকে না তাদের। দিনের পর দিন গরম যেভাবে বাড়ছে, তাতে ট্রাফিক পুলিশদের অসুস্থতাও বাড়ছে। কিন্তু তারপরও, সূর্যের চোখরাঙানি যতই বাড়ুক, মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণের কাজে অবিচল ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।এ অবস্থায় রোদের তীব্রতা থেকে সাময়িক রেহাই পেতে ট্রাফিক পুলিশদের হাতে ছাতা, রোদ চশমাসহ একাধিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাদের সুস্থতার কথা ভেবে সরবরাহ করা হচ্ছে স্যালাইন-গ্লুকোজও। ট্রাফিক সিগন্যাল কনসোল বক্স বা কিয়স্কে পানি ঠান্ডা রাখার জন্য মাটির কলসি বা কুঁজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।কলকাতার এক ট্রাফিক সার্জেন্ট সঞ্জয় সিং জানান, ফ্রিজে পানি রাখলে তা খুব বেশি ঠান্ডা হয়ে যায়। তাই সেই পানি পান করা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। কিন্তু মাটির কলসির পানি ঠান্ডা হলেও তা ফ্রিজের মতো তীব্র ঠান্ডা হয় না। মাটির পাত্রে পানি রাখলে তার গুণমানও বজায় থাকে। তাই মাটির পাত্রের পানির সঙ্গে ওআরএস অথবা গ্লুকোজ মিশিয়ে পান করলে আমাদের উপকার হয়।এগুলোর পাশাপাশি, ট্রাফিক পুলিশদের স্বস্তি দিতে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) হেলমেট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।জানা গেছে, এই এসি হেলমেটে ঠান্ডা করার যন্ত্র চলে ব্যাটারিতে। সেটি একবার চার্জ দিলে প্রায় আট ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করে। এই হেলমেট রাস্তায় ধুলোবালির দূষণ থেকেও খানিকটা রক্ষা করে পুলিশ কর্মীদের।বর্তমানে পুলিশ সদস্যরা যে হেলমেট ব্যবহার করেন তার থেকে ৫০০ গ্রাম বেশি ওজন এসি হেলমেটের। যন্ত্রের মাধ্যমে বাইরে থেকে বাতাস টেনে তাকে পরিশুদ্ধ করে এই হেলমেটের ভেতর প্রবেশ করানো হয়।তবে এসি হেলমেট পরে কাজ করলে মাথার সঙ্গে দেহের অন্যান্য অংশের তাপমাত্রা যে ফারাক হয়, তাতে শরীরের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত কুমার গোয়েল।উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে গরম থেকে বাঁচতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের জন্য ‘নেক কুলার’-এর ব্যবস্থা করেছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু সেটি ব্যবহার করার ফলে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এর জন্য পরে সেটি বাতিল করতে হয়।এদিকে, ট্রাফিক পুলিশদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে ট্রাফিক সামলানোর গুরুদায়িত্ব পালন করেন যেসব সিভিক ভলেন্টিয়ার ও গ্ৰিন পুলিশ, গরমের কারণে তাদের সবার ডিউটি কমিয়ে ছয় ঘণ্টা করা হয়েছে।