অভয়নগর সংবাদদাতা
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় মাছের ঘেরে অপদ্রব্য প্রয়োগ করে দুষণ হচ্ছে পরিবেশ ও ঝুঁকি বাড়ছে জনস্বাস্থ্যের । মান নিয়ন্ত্রনে নজরদারি না থাকায় খাওয়ার অযোগ্য হাওয়া সত্বেও ওই সব ঘেরের মাছ বিক্রয় হচ্ছে হাটবাজারে। তীব্র তাপদহের মধ্যে অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন বিলে অবস্থিত মাছের ঘেরে দুগন্ধযুক্ত পশুপাখি ও পোল্টির বিস্টার(লিটার) প্রয়োগ করা হচ্ছে। ওইসব অপদ্রব্য প্রয়োগের কারনে দুর্গন্ধে রাস্তা – ঘাটে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অপদ্রব্য প্রয়োগঘেরের মাছ খাওয়ার অযোগ্য হওয়ার পরেও, এ সকল ঘেরের মাছ বিক্রয় করা হচ্ছে বাজারে। এমনকি রান্নার পর দুর্গন্ধ রেব হয় ওই সব মাছ থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নওয়াপাড়া -মনিরামপুর সড়কের পৌরসভার অদূরে অবস্থিত দেবুর মিল সংলগ্ন মাছের ঘেরে প্রতিনিয়ত অপদ্রব্য প্রয়োগ করা হচ্ছে। তিব্র গরমের মধ্যে জনসাধারন দুর্গন্ধে ওই সড়ক দিয়ে নাকে কাপড় দিয়ে কষ্টকরে চলাচল করছেন। ওই সড়ক দিয়ে তিন থেকে চার কিলোমিটার দূরাত্বে রয়েছে ধোপাদী গ্রামের উলুবটতলা এলাকার বিল। ওই বিলের গা ঘেষে কাঁচা রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে রয়েছে ছোট বড় অনেক মাছের ঘের। সরজমিনে দেখা গেছে সেখানকার অনেক ঘেরে অবাধে প্রয়োগ করা হচ্ছে অপদ্রব্য। ঘেরের পানিতে ভেসে রয়েছে বস্তাবন্দি ওই সব অপদ্রব্য। বর্তমানে চাষীরা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কাধেঁ বাক নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। ঘেরে ব্যবহৃত ওইসব অপদ্রবের দুর্গন্ধে তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। ঘের মালিকেরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খোলেনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কৃষক জানান, দুর্গন্ধের কারনে তারা রাস্তা দিয়ে ধান আনা নেওয়া করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া যে সব ঘেরে অপদ্রব্য প্রয়োগ করা হয় সে সব ঘেরের মাছ রান্না করলে দুর্গন্ধে খাওয়া যায় না। তাই তারা এলাকার ঘেরের মাছ খায় না। ধোপাদী ডুমুরতলা সড়কের আশ পাশে লোকালয়ের মধ্যে অবস্থিত ঘেরেও দেয়া হচ্ছে অপদ্রব্য। দুর্গন্ধে ওই সব ঘেরের পাশে অবস্থিত বাড়ি ঘরে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রায় সর্বত্র চলছে ঘেরে অপদ্রব প্রয়োগ। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ি রাতের আধাঁরে ওই সব অপদ্রব্য ছোট ছোট ট্রাকে করে ঘেরে সরবরাহ করছে। সস্তায় পেয়ে মাছ চাষিরা ওই সব অপদ্রব্য তাদের মাছের ঘেরে প্রয়োগ করছেন। এতে মাটি ও পানির ভৌত গুনাগুন নষ্ট হয়ে খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ছে ওইসব ঘেরের মাছ।সাধারন্ত সাদা মাছের (চিংড়ি বাদে) ঘেরে প্রয়োগ করা হয় অপদ্রব্য। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৮৩৮ হেক্টর বিশিষ্ট৩৪৫০টি সাদা মাছের ঘের ও ৩৪৫২ হেক্টর বিশিষ্ট ৪৮১০টি পুকুর রয়েছে। অধিকাংশ ওই ঘের ও পুকুরে অপদ্রব্য প্রয়োগ করা হয়। মৎস্য মানন্ত্রিণ আইনে রয়েছে অপদ্রব্য প্রয়োগের শাস্তি রয়েছে সর্বচ্চ ৮ লাখ টাকা জরিমানা ও সশ্রম করাদন্ড। এলাকাবাসীর অভিযোগ দীর্ঘদিন আইনী প্রয়োগ না করায় মাছের ঘেরে অবাধে অপদ্রব্য প্রয়োগ করা হচ্ছে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো: আমিনুল হক বলেন, ‘মাছের ঘেরে অপদ্রব্য প্রয়োগ করা হচ্ছে এমন আভিযোগ কেউ করে না। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’