প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য ২৮ আগস্ট

0
18

প্রতিদিনের ডেস্ক:
চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপারস্টার চিত্রনায়ক শাকিব খানের করা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৮ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মামুন আল মোর্শেদ এ দিন ধার্য করেন।এদিন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। পেশাগত কারণে ব্যস্ততা থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি বলে সময়ের আবেদন করেন বিবাদীর আইনজীবী খায়রুল হাসান। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৮ আগস্ট দিন ধার্য করেন।২০২৩ সালের ৫ জুলাই ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। তখন রহমত উল্লাহ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।২০২৩ সালের ২৩ মার্চ দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে শাকিব খান বাদী হয়ে রহমত উল্লাহর নামে এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামি রহমত উল্লাহকে ওই বছরের ২৬ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।পরে ২৬ এপ্রিল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করে মামলাটি বদলির আদেশ দেন। এরপর মামলার বিচারকাজের জন্য ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর আদালতে বিচারের জন্য বদলি করা হয়।গত ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ টেলিভিশনে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ায় অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে চিত্রনায়ক শাকিব খান আরও একটি মামলা করেন। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে এ মামলা করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চার বছর আগে চিত্রনায়ক শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করতে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে শিবা আলী খানকে মনোনীত করা হয়। এ ছবির শুটিংয়ের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ায় যান শাকিব। তবে ভিসা জটিলতায় শিবা আলী অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পারেননি। তার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেনেসা সাবরিনের সঙ্গে শাকিবকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন রহমত উল্লাহ। শাকিব তার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে প্রস্তাবটি নাকচ করেন।মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শুটিং শেষে শাকিবকে রিফ্রেশমেন্টের জন্য ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রেনেসা সাবরিনসহ আরও ২/৩ জন অপরিচিত লোককে দেখতে পান শাকিব। মামলার আসামি রহমত উল্লাহসহ অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাবে খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার পানীয় পান করেন তারা। এক পর্যায়ে শাকিব অসুস্থবোধ করেন। হোটেলে ফেরত আসার সময় রহমত উল্লাহ এবং অন্যদের খোঁজ করেন শাকিব। তবে তাদের না পেয়ে রেনেসা সাবরিনের কাছে বিদায় নিয়ে গভীর রাতে হোটেলে ফিরতে চান।শাকিবকে তখন রেনেসা সাবরিন বলেন, ‘আপনি যেহেতু অসুস্থবোধ করছেন, তাহলে আমি আপনাকে হোটেলরুমে পৌঁছে দিয়ে আসি।’ শাকিব অনেকটা নিরুপায় হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হন এবং হোটেলে ফিরতে ক্লাব থেকে বের হন। হোটেলে ফেরার সময় বেশি অসুস্থ বোধ করলে এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি।অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরদিন সকালে আসামি রহমত উল্লাহ শাকিবকে ফোনে জানান যে, ‘তুমি রাতে ওই নারীর সঙ্গে কী করেছো সবকিছুর ভিডিও ক্লিপ আমার হাতে। তুমি যদি আমাকে এক লাখ ডলার চাঁদা না দাও তাহলে সব ভিডিও ক্লিপ এবং রেনেসা সাবরিনকে নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে তোমার নামে অভিযোগ করবো। তাহলে তুমি বাংলাদেশে যেতে পারবে না।’এ রকম বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো হলে এক পর্যায়ে শাকিব ভয় পেয়ে যান। শাকিব ভয়ে এবং তার ব্যক্তিগত জীবন ও পারিবারিক সমস্যার কথা চিন্তা করে আসামি রহমত উল্লাহকে পাঁচ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেন। পরে আসামি রহমত উল্লাহ তাকে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোট ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন। এরপর আর চাঁদা দিতে না পারায় শাকিবকে জানানো হয় যে, তোমার নামে অস্ট্রেলিয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে।চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দিলে আসামি রহমত উল্লাহ বিভিন্ন জায়গায় যেমন- ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং শাকিবের পরিবারের সদস্যদের কাছে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটাতে থাকেন। এরপর গত বছরের ১৬ মার্চ রহমত উল্লাহ শাকিব খানের কাছে এক লাখ ডলার চাঁদা দাবি করেন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।এদিকে, গত বছরের ১৩ এপ্রিল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালতে রহমত উল্লাহ বাদী হয়ে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে একটি মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।