প্রতিদিনের ডেস্ক:
রাজধানীর মালিবাগে জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খতনা করতে গিয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার চিকিৎসক এস এম মুক্তাদির ও মাহাবুব মোরশেদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৬ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।সোমবার (১৩ মে) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন।চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। মারা যাওয়া শিশুর নাম আহনাফ তাহমিন আয়হাম (১০)। বাবার নাম ফখরুল আলম। সে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।এ ঘটনায় শিশুর বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে আহনাফকে সুন্নতে খতনা করানোর জন্য তার বাবা ফখরুল আলম জে এস হাসপাতালের চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরের কাছে নিয়ে যান। তিনি ওই সময় কিছু টেস্ট লিখে দেন। ওই হাসপাতালেই টেস্টগুলো করে ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যান। রাতে চিকিৎসক ফোন করে জানান, রিপোর্টগুলো ভালো আছে। সুন্নতে খতনা করতে কোনো সমস্যা নেই।পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৮টায় ছেলেকে সুন্নতে খতনা করানোর জন্য স্ত্রী খায়রুন নাহারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি হাসপাতালে যান। পরে ছেলেকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। আসামিরা জানান, তাদের ২০/২৫ মিনিট সময় লাগবে। তখন আহনাফের বাবা-মা বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন।৩০/৩৫ মিনিট পর ওটি রুমের দরজায় নক করলে ডাক্তাররা জানান আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে। এভাবে এক ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর আহনাফের বাবা ওটি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে নিষেধ করা হয় এবং আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলা হয়।পরে সন্দেহ হলে ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করেন। সেখানে দেখতে পান, তার ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তার বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছে এবং ছেলেকে নাকে ও মুখে নল দিয়ে রক্ত বের হওয়া অবস্থায় দেখেন। তখন চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। ছেলের অবস্থা দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে ডাক্তাররা কর্ণপাত না করে নিজেরাই আহনাফের বুকে চাপাচাপি, হাত-পা মালিশ করতে থাকেন।তখন জোর করে ফকরুল আলমকে ওটি রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়। দুই ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও তারা শিশুটির বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে ফখরুল জানতে পারেন তার ছেলে আহনাফ তামহিদ মারা গেছেন।