৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

যশোরে খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে ইজিবাইক থেকে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে স্থানীয় একটি চক্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে বিগত কয়েক বছর ধরে ইজিবাইক থেকে বেশুমার চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে স্থানীয় একটি চক্র। জুয়েল নামে এক বিতর্কিত যুবকের নেতৃত্বে ইজিবাইক কেন্দ্রিক চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটে এই অনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। ওই চক্রের সদস্য আইউব হোসেনসহ কয়েকজন প্রকাশ্যে এই চাঁদাবাজি করে চলেছে বলে অভিযোগ। গত বছর চক্রের আইউব ও রিপন গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হলেও টনক নড়েনি চক্রটির। খাজুরা স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া ইজিবাইক প্রতি তারা প্রতিদিন আদায় করছে ৫০ টাকা করে। আর প্রতিদিন শতাধিক চালক জিম্মি দশায় পড়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। টাকা আদায়ের সময় চক্রের লোকজন স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় উপশহর ফাঁড়ি পুলিশের কতিপয় সদস্যএই চাঁদাবাজির ঘটনা অবগত থাকলেও অজ্ঞাত কারণে নিরবতা পালন করছে। ভুক্তভোগী চালকেরা চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকা ও ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালকদের একাধিক সূত্র থেকে তথ্যে মিলেছে, খাজুরা স্ট্যান্ড থেকে মাগুরা রুটে আসা যাওয়া করা ইজিবাইকে চালকদের জিম্মি করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে চাঁদাবাজি। কয়েক বছর ধরে যশোর উপশহর এলাকা ও যশোর মাগুরা সড়কে যাত্রীবহন করা ইজিবাইক চালকগন জিম্মি জুয়েলের নেতৃত্বে চলা আইউব আলী চাঁদাবাজ চক্রের হাতে। খাজুরা বাস স্ট্যান্ড থেকে শহরের রুটে ইজিবাইক চালালে প্রতিদিন ২০ টাকা করে আদায় করা হয়। খাজুরা বাস স্ট্যান্ড, উপশহর এলাকা থেকে যশোর মাগুরা সড়কে ইজিবাইক ঢুকলেই আদায় করা হচ্ছে ৫০ টাকা করে প্রতিদিন। উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাহাদুরপুর মনোহরপুর, ইছালী ও খাজুরা পর্যন্ত আসা যাওয়া করা বাইকগুলো থেকে এই ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়া আড়পাড়া মাগুরা ও সীমাখালী থেকে কোনো ইজিবাইক উপশহর খাজুরা স্ট্যান্ডে আসলে তাদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করা হচ্ছে। ইজিবাইক ও অন্যান্য পরিবহনে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কঠোর হুঁশিয়ারি সত্বেও খাজুরা বাস স্ট্যান্ডের চক্রটি স্থানীয় ফাঁড়ির কতিপয় সদস্য ম্যানেজ করে এখানে চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ। প্রতিদিন শতাধিক ইজিবাইক থেকে এরা চাঁদা আদায় করছে। রাতে খাজুরা বাসস্ট্যান্ডের দুটি দোকানে বসে চক্রটি আদায় করা ওই টাকা ভাগাভাগিও করে। এই চাঁদাবাজ চক্রের নেপথ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে জুয়েল নামে এক যুবক। তার নেতৃত্বে কবরস্থান দাস পাড়ার আইউবসহ কয়েকজন ৫শ’ টাকা দিন হাজিরায় দিনভর এই চাঁদাবাজি করে। ভুক্তভোগী একাধিক ইজিবাইক চালকের গোপন অভিযোগে গত বছর জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি টিম অভিযান চালায়। এসময় ইজিবাইক থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায়ের সময় এসআই সোলাইমান আক্কাস আটক করেন আইউব আলী ও রিপন হোসনকে। তাদের কাছ থেকে আদায় করা চাঁদার এক হাজার ৫শ’ টাকাও উদ্ধার করা হয় ওই সময়। কয়েকদিনের মধ্যে তারা জামিন পেয়ে একই কাজে জড়িয়ে পড়ে। আর এই সংঘবদ্ধ চক্রটি ইজিবাইক স্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়ে ড্রাইভারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। এদিকে কয়েকজন ইজিবাইক চালক ও চালক সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদকের কাছে এসে অভিযোগ করেছেন ওই চক্রটি স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের সামনেই ওই টাকা আদায় করে। উপশহর ফাঁড়ির দুই সদস্যকে প্রতিদিন এক হাজার করে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা দেয় বলে জাহির করে চাঁদা উঠাচ্ছে চক্রটি। শেখহাটি ও ঘোপ কবরস্থান পাড়ার একটি চিহ্নিত চক্র এর নেতৃত্বে রয়েছে। চাঁদাবাজদের অপতৎপরতায় অতিষ্ঠ চালকরা জড়িতদের আটক দাবি করেছেন। এছাড়া জেলা গোয়েন্দা শাখার ফের অভিযান দাবি করেছেন অনেক ভুক্তভোগী। এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত একেএম সফিকুল আলম চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি জানিয়েছেন, কোনো প্রকার চাঁদাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালকেরা তাকে তথ্য দিলে কিংবা অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া অভিযোগের ব্যাপারে তিনি খোঁজখবর নেবেন এবং কার্যকরি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছেন।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়