১লা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১৫ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

ডিহাইড্রেশন এড়াতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

প্রতিদিনের ডেস্ক:
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যেও পেশাগত বা বিবিধ কারণে যাদের ঘর থেকে বের হতে হয়, তাদের শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হতে পারে। ডাক্তারি ভাষায় শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব হলে তাকে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা বলে।ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা এড়াতে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন এম আর খান শিশু হসপিটাল এবং ইন্সটিটিউশন চাইন্ড হেল্থ’র হেড অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন প্রফেসর ডা. ফরহাদ মনজুর। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, এই গরমে যাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়, তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বাসা থেকে বিশুদ্ধ ফোটানো পানি সঙ্গে নিয়ে বের হতে হবে। একেবারে বেশি করে পানি পান না করে, একটু পর পর চুমুক দিয়ে পান করতে হবে। বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে খাবার স্যালাইন মিশিয়ে নিলে তা আরও বেশি কার্যকর হবে বলেও জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এ ছাড়া রোদ এড়িয়ে চলা, ছাতা ব্যবহার করা, সুযোগ করে বেশ কয়েকবার মুখ-হাত-পা-ঘাড় ধুয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।তীব্র গরমে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছে গরমের কারণে সকলের খাদ্যে পরিবর্তন আনা জরুরি। এ সময় ভাজা-পোড়া-ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলতে হবে। তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে। মাংস ও বিরিয়ানি-জাতীয় খাবার কমিয়ে দিতে হবে। মাছ-ডাল-বিভিন্ন রকমের সবজি বেশি করে খেতে হবে। তরকারির মধ্যে লাউ-কাঁচা কলা-ধুন্দুল-চিচিঙ্গা এসবের ওপর বেশি জোর দিতে হবে।ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে। এগুলো সম্পর্কে জানলে বা সচেতন হলে সহজেই এটা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার লক্ষণগুলো হচ্ছে—• ডিহাইড্রেশন হলে শরীরের মাংসপেশিতে পরিমাণমত পানি পৌঁছায় না। হঠাৎ করে হাত-পায়ে টান লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। হাঁটতে বা দৌড়াতে গেলে কিংবা ওঠাবসার সময় প্রায়ই টান লাগতে পারে।• শরীরে পানির ঘাটতি হলে, লিভার ঠিকমত কাজ করতে পারে না। লিভার পানির সাহায্যে গ্লাইকোজেন তৈরি করে, যা শক্তি যোগায়। • মাথাব্যথা হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো ডিহাইড্রেশন। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়। • গরমে শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। ত্বক অত্যধিক শুকিয়ে যায়। ঠোঁট ফাটতে শুরু করে। • হঠাৎ করে প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে শরীরে পানির অভাব রয়েছে। এ ছাড়াও শরীরে পানির ঘাটতির কারণে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি প্রস্রাব করার সময় জ্বালাবোধ হতে পারে।গরমের সময় দৈনন্দিন জীবনে আরও কিছু বিষয়ের প্রতি নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিকদার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সিয়াম আহমেদ। বলেন, প্রচণ্ড গরমের সময় বাইরে থেকে বাসায় ফিরে গোসল করা বা ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না। এমনকি, বাইরে থেকে এসে সরাসরি এসি ছাড়া যাবে না। কিছুক্ষণ ফ্যানের নিচে বসে শরীরের তাপমাত্রা সহনীয় করে তারপর গোসল করা যাবে।এ সময় বাইরের খোলা এবং ভাজা-পোড়া খাবার একদমই খাওয়া যাবে না। এতে আমাশয় বা পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্রচুর বিশুদ্ধ পানির পাশাপাশি স্যালাইনও খাবার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়