রেজাউল করিম, লোহাগড়া
নড়াইলের লোহাগড়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংর্ঘষ হয়েছে। এ সময় ২৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর এবং শিশুসহ তিন জন আহত হয়েছে। আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতাল ও ঢাকায় ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার ডহরপাড়া গ্রামে বিক্ষিপ্ত ভাবে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জানা গেছে, গত ২১মে অনুষ্ঠিত লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লাহুড়িয়া গ্রামের সিকদার আব্দুল হান্নান রুনু হেলিকপ্টার প্রতীকে নির্বাচন করে হেরে যান। লাহুড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ দাউদ হোসেন বিজয়ী প্রার্থী একেএম ফয়জুল হক রোমের আনারস প্রতীকে কাজ করেন। নির্বাচনের পরের দিন লাহুড়িয়া বাজারে পরাজিত প্রার্থী সিকদার আব্দুল হান্নান রুনুকে হেনস্থা করে দাউদ হোসেনের লোকজন। এ ঘটনার পর থেকে দুগ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্ট হয়। ২৫মে সন্ধ্যায় পরাজিত প্রার্থী রুনুর সমর্থক লাহুড়িয়া ডহরপাড়ার তরিকুল মোল্যাকে (৪৫) দাউদ হোসেনের লোকজন মারধর করে আহত করে। বর্তমানে তরিকুল মাগুরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।এ ঘটনার জের ধরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রুনু সিকদারের লোকজন প্রতিপক্ষ দাউদ গ্রুপের সমর্থক গিয়াস উদ্দিনের (৬০) ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।এদিকে গিয়াস উদ্দিনের ওপর হামলার ঘটনায় দাউদ হোসেন গ্রুপের শতাধিক লোকজন লাঠিসোঠা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ পরাজিত প্রার্থী রুনু সিকদারের সমর্থকদের ওপর হামলা করে ডহরপাড়া গ্রামের রবিউল মোল্যা, টুকু মেম্বর, আবুল শেখ, আহাদ শেখ, ই্উনুস শেখ, ওবায়দুর শেখ, নাজমুল শেখ, আশিক শেখ, আরব মোল্যা , তরিকুল মোল্যা , আহম শেখ, হিরু মোল্যা, সরোয়ার মোল্যা, কাশেম মোল্যা, তালুকপাড়ার শিহাব মোল্যা, ছায়ফার মোল্যা, দিদার কাজী, তরিকুল কাজীর বাড়িঘর ভাংচুর করে। রুনুর ছেলে লাহুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরান সিকদার জানান, তাদের পক্ষের অন্তত ২০টি পরিবারের বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এসময় তরিকুল মোল্যার ৭বছর বয়সী মেয়েকে মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়েছে। তরিকুলদের বাড়ি হতে ৩টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে রুনু সিকদারের লোকজন প্রতিপক্ষ দাউদ হোসেনের গ্রুপের লাহুড়িয়া পশ্চিমপাড়ার কালাম শেখ, মিজানুর রহমান, ইখতিয়ার, আলী মিয়াসহ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। সাবেক চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন জানান, প্রতিপক্ষ রুনু সিকদারের সমর্থকরা একত্রিত হয়ে তাদের পক্ষের অন্তত ১০টি বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। লাহুড়িয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সেলিম উদ্দীন জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।